রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার লোভ দেখিয়ে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় রাশিয়াতে। এরপর কেড়ে নেওয়া হয় পাসপোর্ট। রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয় তাদের। তারপর পাঠিয়ে দেওয়া হয় যুদ্ধক্ষেত্রে। এই কাজে জড়িত এক মানবপাচার চক্র। এই চক্রের পাল্লায় পড়ে একশর বেশি ভারতীয় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ায় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিল।
সম্প্রতি যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় সেনাদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ ভারতীয়। এছাড়া নিখোঁজ আছেন আরও ১৬ জন। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৭ জানুয়ারি এ তথ্য জানিয়েছে। তারা বলেছে, মোট ১২৬ ভারতীয় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ায় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিল।
তাদের মধ্যে ৯৬ জন ইতিমধ্যে দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ১৮ ভারতীয় এখনো যুদ্ধ করছেন। এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল। তিনি আরো বলেন এখনো যারা সেনাবাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করছেন তাদের ফিরিয়ে দিতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলছে।
এদিকে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে ভারতীয় নাগরিকদের নিয়োগ স্থগিত করার দাবি জানিয়েছে নয়াদিল্লি এবং রাশিয়ায় কর্মসংস্থানের সময় ভারতীয়দের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।গত ১৪ জানুয়ারি খবর বের হয় কেরালার এক যুবক সম্মুখযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে টনক নড়ে নয়াদিল্লির।
২০২৪ এর জুলাইয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সে সময় ভারতীয়দের ‘ছেড়ে’ দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। গত অক্টোবরে কাজান ব্রিকস সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে পুতিনের সঙ্গে আবারও কথা বলেন মোদি। ভুলপথে চালে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন এবং যুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন তাদের মুক্ত করতে তিনি পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন পুতিন।
এদিকে ভারতীয় পুলিশ গত বছর মে মাসে চারজনকে গ্রেফতার করার পর সন্দেহভাজন মানব পাচারকারীদের একটি নেটওয়ার্কের খবর পায়। সেই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্তত চারজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তারও করেছে কর্তৃপক্ষ।
টিএ/