৯০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিলো ইসরায়েল

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে প্রথম দিনে হামাস ৩ জিম্মিকে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করার পরই ইসরায়েলের কারাগার থেকে অন্তত ৯০ ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের মধ্যে পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমের ৬৯ নারী এবং ২১ কিশোর রয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস।

লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া বেশিরভাগ ফিলিস্তিনেক সম্প্রতি আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো সাজা ঘোষণা করা হয়নি। এর মাধ্যমে রোববার (১৯ জানুয়ারি) দীর্ঘ ১৫ মাস রক্তক্ষয়ের পর গাজায় কার্যকর হয় বহুল প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি।

এ ছাড়া, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রথমদিনে তিন ইসরায়েলি জিম্মি রোমি গনেন, ডোরন স্টেইন ব্রেচার এবং এমিলি দামারিকে মুক্তি দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপর তাদেরকে রেড ক্রসিংয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে, তাদেরকে ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

একই প্রতিবেদনে বলা হয়, চুক্তির অংশ হিসেবে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় তেল আবিব। চুক্তির আওতায় একজন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে নেতানিয়াহু প্রশাসন। মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য খান ইউনিস হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে, ফ্রান্সভিত্তিক পৃথিবীর প্রাচীনতম সংবাদমাধ্যম এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টানা ১৫ মাসের বোমা হামলা বন্ধ হওয়ার পর গাজার বাসিন্দারা নিজেদের বাড়িঘরের দিকে ফিরতে শুরু করেছে। এখন তারা প্রয়োজনীয় খাদ্যের জন্য অপেক্ষা করছে। তবে এখন থেকে প্রতিদিন গাজায় ত্রাণবাহী অন্তত ৬০০ ট্রাক প্রবেশ করবে। যা এরই মধ্যে এসে পৌঁছেছে।

এ ছাড়া আলজাজিরার অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। সে হামলার অবসান হলো ২০ জানুয়ারি থেকে। তবে এরই মধ্যে প্রাণ চলে গেছে ৪৬ হাজার ৯১৩ ফিলিস্তিনির। আহত হয়েছেন এক লাখ ১০ হাজার ৭৫০ জন।

প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে হামাসের হাতে থাকা ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল তাদের হাতে আটক প্রায় ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। চুক্তির প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই বন্দি বিনিময় হবে। একই সঙ্গে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়িঘরে ফেরার অনুমতি পাবে। পাশাপাশি ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে প্রতিদিন গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।

দ্বিতীয় ধাপে হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিরা মুক্তি পাবে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হবে। এর মাধ্যমে ‘টেকসই শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে’। তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে গাজা পুনর্গঠন হবে- যা শেষ করতে কয়েক বছর পর্যন্ত লাগতে পারে। একই সঙ্গে মৃত ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে।

Share this news on: