আগুনে নিভে গেলো ৭৬ প্রাণ, তুরস্কে শোক দিবস ঘোষণা

এখন তুরস্কে শীতকালীন ছুটির সময়, স্কুলগুলো বন্ধ। এই সুযোগে দেশটির বোলু পর্বতমালার একটি স্কি রিসোর্টে ২৩০ জন অতিথি অবকাশযাপনে এসেছিলেন। গ্র্যান্ড কার্তাল হোটেলের অতিথিরা সারাদিনে হয়তো সুন্দর সময় কাটিয়ে ঘুমোতে গিয়েছিলেন। কে জানতো এই রাতেই তাদের জীবনে বিভিষিকা নেমে আসবে?

২১ জানুয়ারি স্থানীয় সময় ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে ১২ তলা বিশিষ্ট এই হোটেলে আগুন লাগে। কোনো ফায়ার অ্যালার্মও শোনেনি কেউ। হঠাৎ ঘুম ভেঙে আগুনের বিভিষিকায় হকচকিয়ে যান তারা। প্রাণ বাঁচাতে অনেকে জানালা থেকে বিছানার চাঁদর বা কাপড় ঝুলিয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। আর যারা পালাতে পারেননি, আগুন পুড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে তাদের। আবার ভবন থেকে লাফিয়ে বাঁচতে যেয়েও মারা যান তিন জন।

এই আগুনের ঘটনায় অন্তত ৭৬ জন মারা গেছেন। এবং আরও অন্তত ৫১ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৫২ জন মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়েছে, এবং ১৪ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক মেডিসিন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। ৪৫ জনের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তাইয়েপ এরদোয়ান এই মর্মান্তিক ঘটনায় ২২ জানুয়ারি জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছেন।

এভাবে প্রায় ১২ ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। বেঁচে ফেরা মানুষ গুলো লোমহর্ষক সব বর্ণনা দেন। ধোঁয়া এত তীব্র ছিল যে শ্বাস নিতে পারছিলেন না তারা। বেশির ভাগ মানুষই ফায়ার এক্সিটের অব্যবস্থাপনার ব্যাপারে কথা বলেছেন। পাশাপাশি ফায়ার অ্যালার্ম না বাজার কারণেও হোটেলের অতিথিরা আগে থেকে কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি। যতক্ষণে টের পেয়েছেন, ততক্ষণে আগুনের তীব্রতা বেড়ে গেছে। এর মধ্যেও যারা ভবনটি থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন, তারা কাছের হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে এবং এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নয়জনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে যে, চারতলায় হোটেলের রেস্তোরাঁ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। পরে সেটি ওপরের তলাগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি এত বড় হোটেলে অগ্নিকাণ্ড মোকাবেলার যে কমতি ছিলো তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

টিএ/

Share this news on: