ছেলেকে মুক্ত করেও শেষ দেখা হলোনা বাবার

স্বপ্নের দেখা পেয়েও সে স্বপ্ন ভেঙেছিলো পিলখানা হত্যাকান্ডে। গল্পটা ঠাকুরগাঁওয়ের রবিউল ইসলাম এবং তার বাবার। যে বাবা গত ১৬ বছর ধরে ছেলের মুক্তির আশায় আদালতে চক্কর দিয়ে গেছেন। বিক্রি করেছেন জায়গা জমিও। শেষমেশ সেই ছেলের মুক্তি হলো। কিন্ত ১৬ বছর অপেক্ষায় থাকা বাবা আব্দুর রহমান পৃথিবীর মায়া ছেড়ে মুক্তি নিয়েছেন মাত্র তিনটা মাস আগে।

রবিউল ইসলাম তৎকালীন বিডিআরে যোগ দিয়েছিলেন ২০০৯ সালে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের নেংটিহারা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। স্থানীয় হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশের পর শখের চাকরিটি পান তিনি।

চাকরি নেয়ার মাত্র ২৬ দিনের সে বছরের ২৫শে ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলার আসামি হন রবিউল। সেই মামলায় তার সাজা হয়। স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় রবিউলের বাবা মায়ের। তবে তার বাবা আব্দুর রহমানের বিশ্বাস ছিল যেহেতু ছেলে নির্দোষ, সে একদিন মুক্তি পাবেই। ছেলের মুক্তির আশায় সর্বস্ব হারাতে বসা আব্দুর রহমান এক পর্যায়ে অসুস্থ হতে থাকেন। গত অক্টোবরে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে মৃত্যুবরণ করেন আব্দুর রহমান।

পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে প্রশিক্ষণ শেষ করে যোগ দেন পিলখানায় বিডিআর বর্তমানে বিজিবি সদর দপ্তরে। ২৬ দিনের মাথায় ঘটে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা। ওই ঘটনার পর থেকে কারাগারে রয়েছেন রবিউল। প্রথমে একটি মামলায় ৭ বছর সাজাভোগ করে বের হন। তার কিছুদিন পর বিস্ফোরক আইনের আরেকটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠান আদালত। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে ২৩ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।

রবিউলের চাচা রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, ছেলের জন্য নানা দুশ্চিন্তায় অসুস্থ হয়ে রবিউলের বাবা আব্দুর রহমান গত অক্টোবর মাসে মারা গেছেন। রবিউলের মা সালেহা খাতুন এখনও অসুস্থ, বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার বাবা বেঁচে থাকলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতো।

টিএ/

Share this news on: