ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুরা বিনামূল্যে পাবে ওষুধ। এমন উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিও/এইচ/ও। গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শিশুদের বিনামূল্যে ক্যান্সারের ওষুধ সরবারহের কর্মসূচি শুরু করেছে সংস্থাটি। এই কর্মসূচির আওতায় মূলত লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা এবং নিউরোব্লাস্টোমাসহ শিশুদের মধ্যে ক্যানসারের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত ওষুধ সরবরাহ করা হবে।
বিশ্বের মধ্যম ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোর শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে এ কর্মসূচিটি গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউ/এইচ/ও। সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম স্ত্রেইট টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় মঙ্গোলিয়া ও উজবেকিস্তানের ক্যানসারে আক্রান্ত শিশুদের জন্য ওষুধের চালান পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ইকুয়েডর, জর্ডান, নেপাল ও জাম্বিয়াতেও বিনামূল্যে ওষুধ পাঠানো হবে।
ডব্লিউএইচও’র হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে এই ছয় দেশের হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৫ হাজার ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। তারা ব্যয়বহুল চিকিৎসা নিতে সমর্থ নয়। সেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য ওষুধ নিশ্চিত করা হচ্ছে এ উদ্যোগের মাধ্যমে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে অন্তত ৪ লাখ শিশু ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার অভাবে তাদের ৭০ শতাংশই অকাল মৃত্যুর সম্মুখীন হয়। উন্নত দেশগুলোতে ক্যানসার আক্রান্ত ৮০ শতাংশ শিশু বেঁচে ফিরলেও বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে বেঁচে ফেরা শিশুর হার ২০-৩০ শতাংশ।
ডব্লিউএইচও’র এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আগামী ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে এই কর্মসূচি ৫০টি দেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে। কর্মসূচি সফল হলে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার শিশুরোগী বিনামূল্যে ক্যানসারের ওষুধ পাবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে ইউনিসেফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে ডব্লিউএইচও।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে প্রতিবছর হাজার হাজার শিশু প্রাণ হারায়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে সেই শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। ডব্লিউ/এইচ/ও’র চাওয়া বিশ্বের কোনো শিশু যেন তাদের আর্থিক অবস্থার কারণে চিকিৎসা সেবার বাইরে না থাকে।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ উদ্যোগ ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের জন্য নতুন আশার আলো জাগাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
টিএ/