ভারতের গোপন তথ্য ফাঁস করেছে ইউএসএআইডি?

ইউএসএআইডি ভারতের নির্বাচনি তথ্য প্রকাশ করে অন্যায্য কাজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাতব্য সংস্থাটিকে সরল মনে বিশ্বাস করেছিল দিল্লি। তারা সে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে- এমন অভিযোগ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কররের।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে গভর্নরদের নিয়ে গভর্নর ওয়ার্কিং সেশনস অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানে বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইউএসএআইডি’র অর্থায়নের তথ্য প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

এতে বলা হয়, ভারতে ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে কয়েক মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প চালু করেছিল ইউএসএআইডি। সে লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের করের অর্থ থেকে ডলার পাঠানো হয়েছিল দিল্লিতে। এসব তথ্য মূলত গোপনীয়। সে চুক্তিই হয়েছিল দাতব্য সংস্থাটির সঙ্গে।

তবে প্রকাশ্যে সেসব গোপন তথ্য ফাঁস করায় বেশ চটেছেন জয়শঙ্কর। ভারতের নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে ইউএসএআইডি অর্থ ঢেলেছে- এমন অভিযোগ নিয়েও উদ্বেগ জানান তিনি। এরইমধ্যে ভারতে নির্বাচন বিষয়ে ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে ২২ ফেব্রুয়ারি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য উৎসবে মার্কিন অর্থায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘নিজের বাড়ি না ছাড়লেও আপনার সুরক্ষা হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। কারণ আপনার চিন্তার প্রক্রিয়া, প্রভাব, বয়ান, মনোবল, কী সঠিক এবং ভুল তা সম্পর্কে আপনার ধারণা ফোনের মাধ্যমেও প্রভাবিত হয়। আপনি প্রতিদিন কী পড়েন, কোন ধরনের ছবি দেখেন, সেসবও।’

যুক্তরাষ্ট্র ভারতের শীর্ষ রাজনীতিকদের ওপর নজরদারি করছে-সে দিকেই কি আঙ্গুল তুললেন জয়শঙ্কর- এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে। দেশটির সরকার ও বিরোধীরা ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়াতে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিষয়েও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন। এই বিষয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের লোকজন সেখানে কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন এবং তা স্পষ্টতই উদ্বেগজনক।’

সংস্থাগুলোর নিজেদের আখ্যান বা দৃষ্টিভঙ্গি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও প্রক্রিয়া আছে জানিয়ে মোদী আস্থাভাজন জয়শংকর বলেন, ‘সরকার হিসাবে আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করছি। কারণ এই ধরনের সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমার বিশ্বাস, প্রকৃত তথ্য উদঘাটিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘আপনি ইউএসএইডের সঙ্গে কাজ করেন বা না করেন, প্রশ্ন সেটি নয়। ভারতে ইউএসএআইডিকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল ঐতিহাসিকভাবে। এখানে ইউএসএআইডিকে ভালো কাজ করার জন্য সৎ বিশ্বাসে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে তারা অসৎ উদ্দেশে কাজ করেছে।’

জয়শঙ্করের মতে, ভারতে যদি এই ধরনের কাজ করা হয়ে থাকে, তাহলে এই অসৎ কাজের সঙ্গে কারা কারা জড়িত তা দেশের জানা উচিত। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপি ইউএসএআইডি’র ওই অর্থ ভারতে ‘ডিপ স্টেট’ বজায় রাখতে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।

Share this news on:

সর্বশেষ