ইবনে সিনার নার্সের শরীরে গণধর্ষণের আলামত

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে চলন্ত বাসে নার্স শাহিনুর আক্তার তানিয়া(২৩)-কে গণধর্ষণ ধরা হয়েছে। সংগ্রহ করা আলামত বিশ্লেষণ করে কিশোরগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে গঠিত মেডিকেল দল প্রাথমিকভাবে গণধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। মৃত্যুর কিছু সময় আগে শাহিনুর গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা সজিব কুমার তিন সদস্যের এই মেডিকেল দলের প্রধান।

‘প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত মেয়েটি গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার আরও কিছু ধাপ বাকি আছে। বাকি পরীক্ষাগুলো দ্রুত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তখন চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে ধর্ষণের প্রাথমিক আলামত পাওয়ার কথা উল্লেখ করে পুলিশের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে’- বলে জানান কিশোরগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন হাবিবুর রহমান।

শাহিনুরকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে বুধবার সকালে বাজিতপুর থানায় নারী নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেন শাহিনুরের বাবা গিয়াস উদ্দিন। মামলার এজাহারে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আরও চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলায় যে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন- গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সালুয়াটেকি গ্রামের নুরুজ্জামান নুরু (৩৯), একই জেলার বীর ওজোলী গ্রামের লালন মিয়া (৩৩), বেঙ্গাবদি গ্রামের আল আমিন (২৮) ও বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৭)।

চারজনের মধ্যে পুলিশ নুরুজ্জামান ও লালনকে গ্রেপ্তার করেছে। নুরুজ্জামান বাস চালক আর লালন চালকের সহকারী। আল আমিনও চালকের সহকারী এবং ঘটনার রাতে তিনি শাহিনুরকে হাসপাতালে নিয়ে যান। আবদুল্লাহ আল মামুন পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা। মামুন পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি পিরিজপুর বাজারের একজন ইজারাদার।

বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আল মামুন এক আদেশে এ মামলায় পাঁচজনের প্রত্যেকের আট দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

৬ মে ঘটনার রাতে গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন, শাহিনুর তাদের বাসের যাত্রী ছিলেন। স্বর্ণলতা পরিবহনের ঢাকার বিমানবন্দর কাউন্টার থেকে শাহিনুর বাসের আরোহী হয়েছিলেন। তিনি একাই ছিলেন। কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। বাসটির শেষ গন্তব্য পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ড। কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড থেকে পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ডের দূরত্ব ১০ মিনিটের। কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে প্রায় সবযাত্রী নেমে যান। তবে শাহিনুর ছাড়া আরও কয়েকজন ছিলেন। পিরিজপুর আসার পথে বাজিতপুরের জামতলি গজারিয়া এলাকায় অজ্ঞাত কারণে শাহিনুর বাস থেকে লাফ দিয়ে সড়কে পড়ে যান। শাহিনুর গুরুতর আহত হন। পরে তাদের লোকজন শাহিনুরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ধর্ষণ কিংবা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি।

তানিয়ার বড় ভাই বাদল মিয়ার অভিযোগ, ধর্ষণের পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: