ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে জয়-পরাজয়ের দোলাচলে থাকা ম্যানচেস্টার সিটি এবারও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারল না। ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে দুইবার এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত জয়বঞ্চিত থাকতে হয়েছে পেপ গুয়ার্দিওলার দলকে। ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিওনের বিপক্ষে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ড্র হয়।
প্রথমে আর্লিং হলান্ডের গোলে লিড নেয় সিটি, তবে দ্রুতই সমতা ফেরান পেরভিস এস্তুপিনান। এরপর ওমার মার্মাউশের গোলে আবারও এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এক আত্মঘাতী গোলের ফলে ম্যাচে ফেরে ব্রাইটন এবং শেষ পর্যন্ত আর গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। দ্বিতীয়ার্ধে প্রচণ্ড চাপে পড়ে সিটি, ফলে জয় না পেয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
ভেম্বরে-ডিসেম্বরে লিগে টানা চারটি ম্যাচ হেরেছিল সিটি, তার মধ্যে একটি ছিল ব্রাইটনের মাঠে, ২-১ গোলে। সেই ক্ষতে এবারও প্রলেপ দিতে পারল না গত চারবারের লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
লিগ টেবিলে আরও নিচে নেমে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে গেল সিটি। ২৯ ম্যাচে ১৪ জয় ও ৬ ড্রয়ে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে তারা। এক ম্যাচ কম খেলে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে নিউক্যাসল ইউনাইটেড।
আর সিটির চেয়ে ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে চেলসি, তারাও একটি ম্যাচ কম খেলেছে।
ম্যাচ শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে সিটির জালে বল জড়ায়। তবে সঙ্গে সঙ্গেই ফাউলের বাঁশি বাজান রেফারি। অল্প সময়ের মধ্যে উল্টো গোলও পেয়ে যায় স্বাগতিকরা।
হলান্ডের পাস ধরে ডি-বক্সে এগিয়ে যাওয়ার মুখে ওমার মার্মাউশ ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় সিটি। দারুণ স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন নরওয়ের স্ট্রাইকার হলান্ড।
প্রিমিয়ার লিগে গত দুই আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার এবার গোল হলো ২১টি। তার চেয়ে ৬টি বেশি নিয়ে তালিকার শীর্ষে লিভারপুলের মোহামেদ সালাহ।
তাদের এগিয়ে থাকার আনন্দ অবশ্য ১০ মিনিটেই শেষ হয়ে যায়। চমৎকার ফ্রি কিকে রক্ষণ দেয়াল ভেদ করে সমতা টানেন একুয়েডরের ডিফেন্ডার এস্তুপিনান। বলের গতি-প্রকৃতি একেবারেই বুঝতে পারেননি গোলরক্ষক স্টেফান ওর্টেগা, জায়গা থেকে নড়েননি তিনি, বল পোস্টে লেগে জালে জড়ায়।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের জমজমাট লড়াইয়ে ৩৯তম মিনিটে আবার এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার সিটি। প্রতিপক্ষের ছোট্ট ভুলের সুযোগে ইলকাই গিনদোয়ান বল পেয়ে পাস দেন মার্মাউশকে এবং ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে গোলটি করেন মিশরের এই ফরোয়ার্ড।
প্রথমার্ধে সমানতালে লড়াই করা এবং প্রতিপক্ষের চেয়ে গোলে বেশি শট নেওয়া ব্রাইটন ৪৮তম মিনিটে আবার সমতায় ফেরে।
গোলটিতে অবশ্য সিটির দুর্ভাগ্য বড় ভূমিকা রাখে। কাছ থেকে তরুণ মিডফিল্ডার জ্যাক হিনশেলউডের শট লক্ষ্যে ছিল না; কিন্তু জটলার মধ্যে বল সিটি ডিফেন্ডার আব্দুখোদির কুজানভের পায়ে লেগে জালে জড়ায়।
উজ্জীবিত ফুটবলে শিরোপাধারীদের ওপর চাপ বাড়ায় ব্রাইটন। দারুণ সব আক্রমণ করতে থাকে তারা। ৮২তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পান কার্লোস বালেবা, সামনে কেবল ওর্টেগা। সময় নিয়ে দেখেশুনে শট নিতে পারতেন; কিন্তু প্রথম ছোঁয়ায় উড়িয়ে মারেন ক্যামেরুনের তরুণ মিডফিল্ডার।
ঘর সামলানোয় ব্যস্ত সময় কাটানোর মাঝে কয়েকবার পাল্টা আক্রমণে উঠলেও, দ্বিতীয়ার্ধে তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি ম্যানচেস্টার সিটি।
এসএস