জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে এক রাজমিস্ত্রিকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) চুরির অপবাদ দিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে যুবককে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছাড়িয়ে পড়ে।
গত বুধবার (১৯ মার্চ) রাতে শাহবাজপুর পূর্ব পাড়া এলাকার হাসমত তালুকদারের বাড়িতে নির্যাতন করা হয় ওই রাজমিস্ত্রিকে।
আহত মামুনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। তারা হলেন মো. ইলিয়াস (২৫) ও মো. মিজানুর রহমান। তাদের দুজনের বাড়ি শাহবাজপুর পূর্ব পাড়া এলাকায়।
নির্যাতনের শিকার যুবকের নাম মো. মামুন (৩০)। তিনি শাহবাজপুর ইউনিয়নের গণেশপুর এলাকার আবদুল হাকিমের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি।
নির্যাতনের ২ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যাই, একটি পাকা ঘরের মধ্যে বিছানার ওপর খালি গায়ের এক যুবক।
প্রথমে তিন ব্যক্তি তাকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন। এ সময় যুবকটি হাত দিয়ে লাঠির আঘাত ফেরানোর চেষ্টা করছিলেন। তখন হাতেই লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছিল। তার পায়ে পেটানো হচ্ছিল। তারপর যুবকটিকে বিছানায় শুইয়ে পেটানো হয়।
এরপর আরও দুজন অংশ নেন। একপর্যায়ে যুবকটি বিছানা থেকে নিচে পড়ে যান। এরপর পাঁচজন এক সঙ্গে মেঝেতে ফেলে তাকে পেটাচ্ছিলেন।
আশপাশে আরও কয়েকজন লোক দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে কেউ একজন এটি মোবাইল ফোনে ধারণ করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজমিস্ত্রি মো. মামুন ওই এলাকার হাসমত তালুকদারের বাড়িতে নির্মাণকাজ করেন। হাসমতের কাছে কাজের টাকা পেতেন মামুন। বুধবার সন্ধ্যার দিকে তাকে টাকা দেওয়ার কথা বলে ওই বাড়িতে ডেকে নেওয়া হয়। টাকা নিয়ে প্রথমে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে হাসমত তার স্বজন এবং প্রতিবেশীরা রাজমিস্ত্রি মামুনকে চোর অপবাদ দিয়ে মারধর করতে থাকেন। পরে তাকে একটি ঘরের ভেতরে নিয়ে পেটানো হয়।
নির্যাতনের শিকার যুবকের মা বলেন, ‘আমার ছেলে মিস্ত্রির কাজ করে। কাজের পাওনা টাকা চাইতে গিয়েছিল। তারা চুরির অপবাদ দিয়ে মাইরে শেষ করছে। সারা শরীরে শুধু আঘাত আর আঘাত। মানুষ মানুষকে এইভাবে মারতে পারে? ভিডিও দেখলেই বুঝা যাই কতটা মারা হয়েছে। আমি এই ঘটনায় বিচার চাই।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো. আতিক বলেন, ‘চুরির অপবাদ দিয়ে মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদেরও ধরার চেষ্টা চলছে।
এসএম/টিএ