৫ অগাস্টের পর থেকে বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গনে তীব্র অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আওয়ামীপন্থি শিল্পীরা এখন কোথায়? সরকারের পতনের পর তাদের কাজের সুযোগে ব্যাপক সংকট নেমে এসেছে। এই শিল্পীরা, যারা একসময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, এখন আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত হয়ে অনেক ক্ষেত্রে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তবে এর মধ্যেও বেশ কিছু শিল্পী নিজেদের আড়ালে রেখেছেন, আর কিছু বিদেশে চলে গেছেন। তবে প্রশ্ন উঠছে, তারা আবারও পেশাগত জীবনে ফিরতে পারবে?
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা ১০ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ। কিন্তু ৫ অগাস্টের পর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। এই পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে, শুধুমাত্র ফেরদৌসই নয়, আরও বেশ কয়েকজন আওয়ামীপন্থি শিল্পী বর্তমানে পেশাগত সংকটে পড়েছেন। তাদের অনেকেই অভিযোগ করছেন, কাজের সুযোগ কমে গেছে এবং তাদেরকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।
একই সময়ে, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা, গায়িকা মমতাজ এবং অভিনেত্রী নিপুন আক্তারও নিজেদের আড়ালে রেখেছেন। সরকার পতনের পর, তারা কোনো নতুন কাজ পাননি। আরিফিন শুভ, যিনি ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় শেখ মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তারও নতুন কাজের খবর নেই। তবে তিনি বর্তমানে ভারতে একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে চঞ্চল চৌধুরী, যিনি সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত পোস্ট করলেও নতুন কাজের খবর প্রকাশ করেননি, কিছু ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন, তবে তার ভবিষ্যত প্রকল্প নিয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি।
এদিকে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর উল্লেখ করেছেন, বর্তমানে বাণিজ্যিক সিনেমাগুলি ঈদকেন্দ্রিক হয়ে গেছে, ফলে সারা বছর কাজের সুযোগ কমে গেছে। বেশ কিছু শিল্পী দেশের বাইরে চলে গেছেন এবং সেখানে নতুন কাজ শুরু করেছেন, তবে তাদের অনেকেই সরকার সমর্থিত শিল্পীদের প্রতি কঠিন অবস্থানে থাকায় দেশে কাজ পাচ্ছেন না।
৫ অগাস্টের পর বাংলাদেশের বিনোদন জগতে রাজনৈতিক বিভাজন স্পষ্ট হয়েছে। সরকার সমর্থিত শিল্পীরা এখন নানা ধরনের পেশাগত সমস্যার সম্মুখীন। কিছু শিল্পী বিদেশে চলে গেলেও, বেশিরভাগই এখন নতুন কাজের খোঁজে আছেন। এই পরিস্থিতি এখনও জটিল, এবং তাদের জন্য আগামী দিনগুলোতে কী অপেক্ষা করছে, সেটি এখন দেখার বিষয়। সঠিক পরিবেশ ও সুযোগের অভাবে, এই শিল্পীরা কি আবার ফিরে আসতে পারবেন সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই শিল্পীমহলে চলছে আলোচনা।
এসএম/টিএ