সীতাকুণ্ডে পুলিশ-জেলে সংঘর্ষে আহত ৩০

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এক যুবককে আটকের ঘটনায় স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ও দুই কনস্টেবলসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার মধ্যরাতে সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ঘাটঘরের পশ্চিমে জেলে পাড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। পরে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের কুমিরা ইউনিয়নের বড় কুমিরা ঘাটঘর জেলেপাড়ায় রুবেল জলদাশ (৩০) নামক এক যুবককে আটক করেন সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ। এ সময় এলাকার অন্য জেলে যুবকরা তাকে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চেয়ে বাধা দিলে এসআই জাহেদ হোসেন জসীম ও সাথে থাকা ফোর্স তাদেরকে মারধর করে বলে অভিযোগ করে। পরে জেলেরাও তাদের ওপর পাল্টা হামলা করে।

এদিকে ঘটনার সময় সেখানে বিলম্বু দাসী (৭৫) নামক এক মহিলার আকস্মিক মৃত্যু হলে পুলিশের হামলায় ওই বৃদ্ধা নিহত হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশের সাথে জেলেদের সংঘর্ষ বাঁধে। জেলেরা বিভিন্নরকম বোতল, ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশও গুলি চালায়। পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলি চালালে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে অন্তত ১৫ জন জেলে নারী-পুরুষ ও পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৫-৩০ জন আহত হন।

এলাকাবাসীর দাবি পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলিতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসেনসহ দুই পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ ও পাঁচজন আহতের কথা জানানো হয়েছে।

কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোর্শেদুল আলম চৌধুরী বলেন, ইয়াবা কারবারি রুবেলকে গ্রেপ্তারে বাধা দেওয়ায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। তিনি বলেন, ওই নারী বয়স্ক। তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। কিন্তু জেলেরা পুলিশের হামলায় ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে ছড়িয়ে দিয়ে হামলা চালান।

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আফজাল হোসেন জানান, রুবেলের কাছে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা ছিল। এই তথ্য নিশ্চিত হয়ে পুলিশ তাকে আটক করলে জেলেরা এসআই জসীম ও সঙ্গীয় ফোর্সের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে তারা সেখানে গেলে জেলেরা তিনিসহ অন্তত ২৫ জন পুলিশকে অবরুদ্ধ করে ব্যাপক হামলা চালায়। জেলেদের মদের বোতল, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এসআই আলীম ও সেকেন্ড অফিসার সুজায়েত আহত হন। এ ছাড়া তিনি, কনস্টেবল কামরুলসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি ওসি (ইনটেলিজেন্স) সুমন বণিকসহ অনেকেই আহত হয়েছেন।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ব্যাপক সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম থেকে অতিরিক্ত ফোর্স গিয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করা হয়। এরপর এলাকা শান্ত হয় বলে ওসি জানান।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: