‘লন্ডনির’ বিকৃত যৌন চাহিদার বলি শিশু কামরান

ঘটনাটি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের। বিকৃতমনা এক ‘লন্ডনির’ যৌন চাহিদা পূরণ না করায় খুন হতে হয়েছে ১০ বছর বয়সী এক শিশুকে। দীর্ঘ তদন্তের পর চার বছর আগে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র কামরান হোসেনের হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে পেরেছে  পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পিবিআই তার মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে কামরান খুনের আদ্যোপান্ত।

পিবিআই মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে জানান, কামরান হোসেন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাগ ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামের মুনির উদ্দিনের ছেলে। ২০১৫ সালে কামরান রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর তার পরিবার অনেক খুঁজেও আর তার খোঁজ পায়নি। বেশ কিছুদিন পরে তারা জানতে পারে, কামরান মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর বাজারে শাহজাহানের ফলের দোকানসহ আশপাশের ফলের দোকানে গাড়ি থেকে ফল নামানোর কাজ করে। খবর পেয়ে বাবা মুনির উদ্দিন ছেলেকে নিতে এলে অভিমানী ছেলে তাকে দেখে পালিয়ে যায়।

ছেলেকে নিতে না পারায় মুনির উদ্দিন ফল ব্যবসায়ীদের তার ছেলের দিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানিয়ে চলে যান। এদিকে ২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মুনির উদ্দিন খবর পান, কামরানের লাশ শেরপুরে গাঙপাড় রোডে একটি পিকআপ ভ্যানের ভেতরে পড়ে আছে। তিনি শেরপুরে আসেন। ওই দিনই মুনির উদ্দিন মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।

পিবিআইয়ের দীর্ঘ তদন্তের একপর্যায়ে ২০ মে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজন আসামি মহসিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মহসিনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত সাদ্দাম, বাদশা ও কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া চারজন গত ২১ মে মৌলভীবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ দাউদ হাসানের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। আসামিদের বাড়ি শেরপুর এলাকায়।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামিরা জানান, জনৈক লন্ডনি মাঝেমধ্যে শেরপুর গোলচত্বর এলাকার একটি ভিডিও দোকানের একটি ঘর ভাড়া নিয়ে শিশু কামরানকে বলাৎকার করতেন। একদিন রাজি না হওয়ায় ওই লন্ডনি লোকটি কামরানকে মারপিট করেন। এরপর তিনি শিশুটিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এ জন্য গ্রেপ্তার হওয়া চারজনসহ আরও তিনজনকে ১০ হাজার টাকা দেন। তারা আরও জানান, এ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা লন্ডনির পরিচয় তারা জানেন না। তাকে হত্যাকারীরা ‘লন্ডনি’ নামেই চিনতেন।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: