বীরপ্রতীক তারামন বিবি অার নেই

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেয়া বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবি মারা গেছেন।

শনিবার ভোরে কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার কাচরিপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

বীরপ্রতীক তারামন বিবি দীর্ঘদিন থেকে ফুসফুস ও শ্বাস-প্রশ্বাস রোগের ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। তিনি স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর ২টায় বীরপ্রতীক তারামন বিবির জানাজা নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

তারামন বিবির জন্ম ১৯৫৭ সালে কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে। বাবার নাম আবদুস সোহবান ও মা কুলসুম বিবি। তার স্বামীর নাম আবদুল মজিদ। তারামন বেগম বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে তিনি বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত হন।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া গ্রামে পবিবারের সঙ্গে বসবাস করেন বীরপ্রতীক তারামন বিবি।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১নং সেক্টরের হয়ে তারামন বিবি জীবন বাজি রেখে মুক্তিবাহিনীদের রান্না বান্না করা, তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা, পাকবাহিনীদের খবরাখবর সংগ্রহ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দেয়া, সম্মুখযুদ্ধে পাকবাহিনীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করাসহ দেশের স্বাধীনতা অর্জনে তার অনেক অবদান রয়েছে। 

স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ এই অবদানের জন্য ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীরপ্রতীক খেতাব প্রদান করে। এরপর অবশ্য দীর্ঘদিন তার কোনো খোঁজ রাখেনি কেউ। ১৯৯৫ সালে তাকে নতুন করে খুঁজে বের করা হয়।

তাকে নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়। একই বছর তার হাতে তুলে দেয়া হয় বীরত্বের পুরস্কার। পরিচিতি আর সুখ্যাতি পেলেও তারামন বিবি নিভৃতেই বসবাস করছিলেন রাজিবপুরে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে।

 

 

 

Share this news on: