তাবলিগ জামাত সংঘর্ষে নিহত এক, আহত শতাধিক

আধিপত্যকে কেন্দ্র করে টঙ্গীতে ইজতেমা ময়দানের ১ নম্বর প্রবেশফটকে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইসমাইল হোসেন (৭০) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক জন।

শনিবার ভোর থেকে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। আহত ব্যক্তিদের টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল ও উত্তরার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও সাঁজোয়া যান মোতায়েন রয়েছে।

শনিবার সকাল থেকেই তাবলিগ-জামাতের মাওলানা জুবায়ের ও দিল্লির মাওলানা সাদের অনুসারীরা টঙ্গীতে ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে রাস্তায় মুখোমুখি অবস্থান নেয়। দুই পক্ষ পৃথকভাবে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও আবদুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া হয়ে আশুলিয়ার দিকে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। এতে সকাল থেকেই যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষেরা।

জানা গেছে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কামারপাড়া থেকে একদল মুসল্লি লাঠিসোঁটা হাতে ইজতেমা ময়দানের ১ নম্বর প্রবেশদ্বারে প্রতিপক্ষের অনুসারীদের ওপর হামলা চালান। মুহূর্তের মধ্যে স্থানটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আধা ঘণ্টা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলার পর পুলিশের হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন দুই পক্ষকে একে অপরের থেকে নিরাপদ দূরত্বে রেখেছে পুলিশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাওলানা সাদের অনুসারীরা ময়দানের ভেতর প্রবেশ করে তা দখলের চেষ্টা করছেন। তাঁদের হাতে লাঠিসোঁটা। ইজতেমা ময়দান দখলের জন্য গতকাল থেকে মোটরসাইকেল ও গাড়িতে করে যেসব মুসল্লি মাওলানা জুবায়েরের পক্ষে এসেছিলেন, তাঁদের যানবাহন আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

উত্তরা জোনের ট্রাফিকের সহকারী কমিশনার জুলফিকার জুয়েল বলেন, ফজরের নামাজের পর এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

টঙ্গী পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত)জানান, ইজতেমার ময়দানের ভেতর ও প্রধান প্রবেশপথগুলো একটি পক্ষ ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও আবদুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া হয়ে আশুলিয়ার দিকে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন আরেকটি পক্ষ। এতে  সেখানে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

জাহিদুল ইসলাম আরও জানান, মুসল্লিরা এমনিতে যান চলাচলে কোনো বাধা দিচ্ছেন না এবং কোনো সংঘর্ষ বা অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি। সমস্যা সমাধানে দুইপক্ষের সাথেই কথা বলছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এই দুই পক্ষে মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এজন্য সামনের বছরের বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত ঘোষণা করেছে সরকার।  আগামী জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

১৫ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই পক্ষ ছাড়াও পুলিশের আইজি, ধর্মসচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সরকারের ওই ঘোষণার পর থেকে সময়ে সময়ে দুই পক্ষ জায়গায় জায়গায় অবস্থান নিয়ে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে আসছে।

 

 

 

 

Share this news on:

সর্বশেষ