সমালোচনার মুখে ‘হিন্দি বাধ্যতামূলক’ করার নীতি থেকে সরল ভারত

পাঠ্যপুস্তকে হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক রাখার কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভারত  জুড়ে সমালোচনার মুখে জাতীয় শিক্ষা নীতির খসড়া সংশোধন করা হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের জন্য হিন্দি আর বাধ্যতামূলক রইল না। বরং শিক্ষাক্ষেত্রে নিজেদের পছন্দ মতো ভাষা বেছে নেয়া যাবে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সোমবার সকালে শিক্ষা নীতির খসড়া সংশোধন করে।

আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হিন্দি বাধ্যতামূলক করার বদলে তাতে ‘নমনীয়’ শব্দটি যোগ করা হয়েছে। যার ফলে ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণিতে নিজেদের পছন্দ মতো ভাষা বেছে নিতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা।

সংশোধিত নতুন খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীনই তিনটি ভাষার মধ্যে একটি বা তার বেশি ভাষার পরিবর্তন করতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা।’

স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা সাহায্য নিতে পারবে বলেও জানানো হয় সংশোধিত খসড়ায়। যে ভাষায় স্কুলে পড়ার সুবিধা, সেটাই বেছে নেয়া যাবে বলে সংশোধনীতে উল্লেখ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ককে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পরেই গত শনিবার কে কস্তুরীরঙ্গনের নেতৃত্বাধীন কমিটি জাতীয় খসড়া শিক্ষা নীতি পেশ করে। সেখানে তিন ভাষার ফর্মুলার প্রস্তাব দেয়া হয়। যার মধ্যে মাতৃভাষা, ইংরেজির পাশাপাশি বাধ্যতামূলক করা হয় হিন্দি।

এই জাতীয় খসড়া শিক্ষানীতি নিয়ে দেশের সর্বত্র, বিশেষ করে দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। তাতে শামিল হয় এনডিএ-র শরিক এডিএমকে এবং পিএমকেও। অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলির ওপর জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দিলে দেশের বহুত্ববাদী চিন্তাধারায় আঘাত লাগবে বলে জানায় তারা।

তামিলনাড়ুতে শুধুমাত্র তামিল এবং ইংরেজি শেখানো হবে বলে জানিয়ে দেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী কেএ সেঙ্গোত্তাইয়ান। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ই পলানীস্বামী।

এমন পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী  নির্মলা সীতারামন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেয়া হবে না বলে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করেন তারা। তারপরই এ দিন সকালে খসড়া সংশোধন করা হয়।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: