একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজসেবী ও গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সচিব ঝর্ণা ধারা চৌধুরী (৮০) আর নেই।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার পর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গান্ধী আশ্রমের পরিচালক রাহা নব কুমার।
এর আগে ২ জুন মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর ঝর্ণাধারা চৌধুরীকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে গত সপ্তাহে স্ট্রোক করার পর থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
একুশে পদক ছাড়াও তিনি রোকেয়া পদক ও ভারতের পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত এই গান্ধীবাদী দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর জয়াগ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সচিবের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
গান্ধী আশ্রমের পরিচালক রাহা নব কুমার জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে ঝর্ণা ধারা চৌধুরী উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। পরে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে তাকে রাজধানীতে নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন সেখানে চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার তার মরদেহ রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে রাখা হবে। শুক্রবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধার জন্য মরদেহ আনা হবে। এরপর বেলা ৩টায় নোয়াখালীর গান্ধী আশ্রমে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে।
ঝর্ণাধারা ১৯৩৮ সালের ১৫ অক্টোবর লক্ষীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম গান্ধীয়ান প্রথম চৌধুরী ও মায়ের নাম আশালতা চৌধুরী। মানব সেবায় নিয়োজিত এই নারী সংসার জীবনে যাননি। গান্ধী আশ্রমের সমাজকর্মী হিসেবে ছুটে চলেন গ্রাম থেকে গ্রামে।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ঝর্ণাধারা চৌধুরী ২০১৫ সালে একুশে পদক এবং ২০১৩ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় বেসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী খেতাবে ভূষিত হন। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক বাজাজ পুরস্কার ১৯৯৮, শান্তি পুরস্কার ২০০০, অনন্যা ২০০১, দুর্বার নেটওয়ার্ক পুরস্কার ২০০৩, কীর্তিমতি নারী পুরস্কার ২০১০, বেগম রোকেয়া পদক ২০১৩, সাদা মনের মানুষ পদক ২০০৭ এবং বিভিন্ন জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পদক লাভ করেছেন।
টাইমস/এইচইউ