ভারতের ছত্তিশগড়ে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত অন্তত ২৫ জন

ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় ছত্তিশগড় রাজ্যে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির মাওবাদী বিদ্রোহীদের তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। এই সংঘর্ষে অন্তত ২৫ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। বুধবার ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর জেলার গভীর বনাঞ্চলে মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটেছে।

ছত্তিশগড় পুলিশ বলেছে, ভারতীয় কমান্ডোরা গুলি চালিয়ে কমপক্ষে ২৫ মাওবাদী বিদ্রোহীকে হত্যা করেছেন।

কয়েক দশক ধরে চলা মাওবাদীদের বিদ্রোহে দেশটিতে মাওবাদী বিদ্রোহী, সেনা এবং বেসামরিক নাগরিকসহ ১২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। মাও বিদ্রোহীরা ভারতের খনিজ-সমৃদ্ধ মধ্যাঞ্চলীয় ওই রাজ্যের প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকারের জন্য বছরের পর বছর ধরে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৭ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহীরা। আদিবাসী অধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পক্ষে লড়াইয়ের দাবি করা মাওবাদীরা নকশাল নামেও পরিচিত।

২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে মাওবাদীদের বিদ্রোহ চরমে পৌঁছায়। ওই সময় দেশটির প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ ১৫ থেকে ২০ হাজার মাওবাদী যোদ্ধার হাতে ছিল।

ছত্তিশগড় রাজ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবেকানন্দ সিনহা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, বন্দুকযুদ্ধে ২৫ জনের বেশি মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। মাও বিদ্রোহীদের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রাজ্যের নারায়ণপুর জেলার প্রত্যন্ত ও গভীর এক জঙ্গলের ভেতরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মাওবাদীদের সংঘর্ষ হয়েছে।

সিনহা বলেন, মাওবাদী বিদ্রোহীদের শীর্ষ নেতাদের ওই জঙ্গলে উপস্থিতির বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে বিদ্রোহীরা গুলি চালালে পাল্টা গুলি ছোড়ে নিরাপত্তা বাহিনী।

তবে এই সংঘর্ষে আসলে কারা নিহত হয়েছেন, সেটি পরিষ্কার নয়। তিনি বলেন, সংঘর্ষে নিহতদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাওবাদী বিদ্রোহীদের ‘আত্মসমর্পণ’ অথবা ‘সর্বাত্মক হামলার’ মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ২০২৬ সালের মার্চের মাঝেই মাওবাদী বিদ্রোহ দমনের আশা করছে।
সূত্র: এএফপি।

আরএম/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ডিসেম্বরের ১৩ দিনেও কোনো রেমিট্যান্স আসেনি দেশের ১০ ব্যাংকে Dec 15, 2025
img
কলম্বিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল অন্তত ১৭ জনের, আহত ২০ Dec 15, 2025
img
স্বর্ণ কিনবেন? জেনে নিন আজকের বাজারদর Dec 15, 2025
img
৩ দাবিতে আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা ডাকসুর Dec 15, 2025
img
রাজধানী ঢাকায় কমবে দিনের তাপমাত্রা Dec 15, 2025
img
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি, কমেছে দাম Dec 15, 2025
img
অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুক হামলার ঘটনায় প্রাণহানি বেড়ে ১৬ Dec 15, 2025
img

চানখারপুলে ছয় হত্যা

হাবিবুর রহমানসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু আজ Dec 15, 2025
img
ওসমান হাদির ঘটনায় মেহেরপুর সীমান্তে বিজিবির নিরাপত্তা জোরদার Dec 15, 2025
img
এমবাপে ও রদ্রিগোর গোলে আলাভেসের বিপক্ষে স্বস্তির জয় রিয়াল মাদ্রিদের Dec 15, 2025
img
এলাকার উন্নয়নে ঐক্যের আহ্বান হাবিবুর রশিদ হাবিবের Dec 15, 2025
img
শব্দদূষণকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে: রিজওয়ানা হাসান Dec 15, 2025
img

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

হলান্ডের জোড়া গোলে ক্রিস্টাল প্যালেসকে বড় ব্যবধানেই হারাল ম্যানচেস্টার সিটি Dec 15, 2025
img
আজ ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হবে সিঙ্গাপুর Dec 15, 2025
img
১৫ ডিসেম্বর: ইতিহাসের এই দিনে আলোচিত যত ঘটনা Dec 15, 2025
img

বুন্ডেসলিগা

টেবিলের তলানির দলের বিপক্ষে কোনোমতে হার এড়াল বায়ার্ন মিউনিখ Dec 15, 2025
img
ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রবাসীদের দেশ গড়ায় অবদান রাখার আহ্বান Dec 15, 2025
img
সিডনির ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন মুসলিম ফল ব্যবসায়ী Dec 15, 2025
img
বৃহস্পতিবারের মধ্যে চূড়ান্ত হচ্ছে বিএনপির শরিকদের আসন Dec 15, 2025
img
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় মামলা Dec 15, 2025