ফিনল্যান্ডে বসবাসরত অভিবাসীদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়ার শর্ত কঠোর করার কথা ভাবছে দেশটির সরকার। ইউরোপের দেশটিতে যারা দীর্ঘ মেয়াদে বসবাস করছেন, যারা ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং যাদের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারাই স্থায়ী বসবাসের অনুমতি বা পিআর পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
স্থায়ী বসবাসের শর্ত কঠোর করতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগের বিষয়টি বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে জানায় ফিনিশ সরকার। ২০২৩ সালে ক্ষমতায় আসে ফিনল্যান্ডের বর্তমান জোট সরকার।
জোটের অংশীদার হিসেবে আছে অতি ডানপন্থী ফিনস পার্টি। ফলে অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জোট সরকার।
ফিনল্যান্ডের ডানপন্থী সরকারের এক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেতে হলে দেশটিতে টানা চার বছর থাকতে হয়। সেই সময় বাড়িয়ে ছয় বছর করার কথা পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, স্থায়ী বসবাসের আবেদনপ্রার্থীদের ফিনিশ বা সুইডিশ—এই দুটি সরকারি ভাষায় ‘সন্তোষজনক’ দক্ষতা দেখাতে হবে। এ ছাড়া ফিনল্যান্ডে কমপক্ষে দুই বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মারি রান্তানেন বলেন, ‘স্থায়ী বসবাসের অনুমতির জন্য সমাজে সফল অন্তর্ভুক্তি একটি পূর্বশর্ত।’
তিনি আরো বলেন, ‘সরকারি কর্মসূচিতে নির্ধারিত লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি হলো অভিবাসীদের ফিনিশ সমাজের নিয়ম মেনে চলা, কাজের প্রতি আন্তরিক হওয়া এবং ভাষা শিক্ষার প্রতি উৎসাহিত করা।
সরকার জানিয়েছে, চার বছর পরও স্থায়ী বসবাসের অনুমতির আবেদন নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে গ্রহণ করা হবে। এ জন্য তিনটি পূর্বশর্ত থাকবে। প্রথমত, ন্যূনতম বার্ষিক আয় ৪০ হাজার ইউরো। দ্বিতীয়ত, ফিনল্যান্ডে স্বীকৃত স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ফিনল্যান্ডে দুই বছরের কাজের অভিজ্ঞতা। তৃতীয়ত, ফিনিশ বা সুইডিশ ভাষায় উচ্চ দক্ষতা এবং তিন বছরের কাজের অভিজ্ঞতা।
ধরা যাক, কোনো আবেদনকারীর প্রয়োজনীয় কাজের অভিজ্ঞতার আছে। তার পরও তাকে প্রমাণ দিতে হবে, তিনি তিন মাসের বেশি বেকারত্ব সুরক্ষা বা সামাজিক সহায়তা গ্রহণ করেননি।
সরকারের এই পরিকল্পনাগুলো এখন দেশটির পার্লামেন্টে উত্থাপনের পর আইন প্রণেতারা আলোচনা করবেন। তার পরই পরিকল্পনাগুলো অনুমোদন পাবে। সরকার আশা করছে, ২০২৬ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে এই নিয়ম কার্যকর করা সম্ভব হবে।
পিএ/টিএ