চিলির উত্তরাঞ্চলে আটাকামা মরুভূমি অঞ্চলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে কিছু অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। খবর রয়টার্সের।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্য মতে, স্থানীয় সময় শুক্রবার (৬ জুন) দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে ((জিএমটি বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট) ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। যার ফলে সামান্য অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে এবং প্রায় ২৩ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ৭৬ কিলোমিটার (৪৭ মাইল)। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল আটাকামা মরুভূমির উপকূলের কাছাকাছি। এই ভূমিকম্পটি বিস্তৃত আটাকামা মরুভূমি অঞ্চলের বিভিন্ন সম্প্রদায়ে অনুভূত হয়।
চিলির হাইড্রোগ্রাফিক অ্যান্ড ওশানোগ্রাফিক সার্ভিস জানায়, ভূমিকম্পটি শক্তিশালী হলেও দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলে সুনামি সৃষ্টির মতো কোনো কারণ তৈরি করেনি। যা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য কিছুটা স্বস্তির। কারণ চিলি প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অফ ফায়ার’-এ অবস্থিত এবং ভূমিকম্প ও সুনামির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
চিলির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ সেনাপ্রেডের উপ-পরিচালক মিগুয়েল অর্টিজ জানান, ভূমিকম্পের ফলে সামান্য অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে এবং বিদ্যুৎ বিঘ্নের কারণে প্রায় ২৩ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু ভূমিধসের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যেগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং স্থানীয় পৌরসভার সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অর্টিজ আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধারের জন্য দ্রুত কাজ চলছে।
চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ এক বিবৃতিতে বলেন, তার সরকার আঞ্চলিক প্রেসিডেনশিয়াল প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তিনি নিশ্চিত করেন, ভূমিকম্পের পর কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সেই সঙ্গে ভূমিকম্প এলাকার জনগণকে শান্ত থাকার এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান।
চিলি ভূমিকম্পের জন্য একটি সুপরিচিত অঞ্চল। ২০১০ সালে দেশটির মধ্যাঞ্চলে ৮.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প এবং পরবর্তী সুনামিতে শত শত মানুষ প্রাণ হারায়। ওই ঘটনার পর থেকে চিলি ভূমিকম্প-প্রতিরোধী অবকাঠামো নির্মাণ এবং জরুরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নতিতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে।
শুক্রবারের ভূমিকম্পটি শক্তিশালী হলেও সেই প্রস্তুতির কারণে ক্ষয়ক্ষতি সীমিত ছিল। তবুও ভূমিধস ও বিদ্যুৎ বিঘ্নের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আটাকামা অঞ্চলের কিছু গ্রামে সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে এবং কিছু বাড়ির দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে কাঠামোগত ক্ষতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সামান্য। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ সেনাপ্রেডের একটি দল ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করছে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছে।
কেএন/টিএ