ঈদের দ্বিতীয় দিনেও গাজায় নিহত অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি

গোটা দুনিয়া যখন ঈদুল আজহার আনন্দে মাতোয়ারা, তখন মৃত্যু আর ধ্বংসই নিয়তি হয়ে উঠল গাজাবাসীর।

ঈদের দ্বিতীয় দিনেও ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান ও গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় কমপক্ষে ৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১০০ জন।

শনিবার (০৭ জুন) স্থানীয় ও চিকিৎসা সূত্রে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন হৃদয়বিদারক তথ্য জানিয়েছে তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদের দ্বিতীয় দিন ভোর থেকেই গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা শহরের সাবরা এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে কমপক্ষে ১৫ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়।

নিহতদের মধ্যে ৬ জন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। ধ্বংসস্তূপে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনুসে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়শিবির লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণে একটি পরিবারের ৪ সদস্যসহ ১২ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৪০ জন। এছাড়া, গাজা শহরের পশ্চিমাংশে বাস্তুচ্যুতদের একটি বাড়িতে বিমান হামলায় আরও ৭ জন নিহত হন।

উত্তর গাজার আল-সাফতাওয়ি এলাকায় ইসরায়েলি কামানের গোলায় নিহত হন ২ জন সাধারণ নাগরিক। জাবালিয়ার পশ্চিমে আবু শেখ এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের একটি সমাবেশে বিমান হামলায় ৩ জনের মৃত্যু হয়। একই অঞ্চলে আল-মুজায়দা স্টেশনের কাছে আরেকটি বাড়িতে বিমান হামলায় এক শিশুসহ আরও ৩ জন নিহত হন।

এছাড়া, রাফার পশ্চিমে ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে ৬ জনকে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনারা। আহত হন আরও অনেকে।

আনাদোলুর হিসাব অনুযায়ী, ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি গুলিতে ১১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৫৮০ জনের বেশি। এখনও ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে, ঈদের প্রথম দিন শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় ৩৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিলেন। ইসরায়েলের ‘গণহত্যামূলক যুদ্ধ’ এখন গাজার চতুর্থ ঈদ কেড়ে নিচ্ছে। এ যুদ্ধের কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৪ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত, লক্ষাধিক আহত, হাজার হাজার নিখোঁজ এবং পুরো গাজা ভূখণ্ড বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

তবু থেমে নেই গাজাবাসী। ঈদের দিনে এক হাতে মৃতদেহ বহন, অন্য হাতে জান্নাতের আশায় তাকিয়ে থাকা চোখ- এই তাদের বাস্তবতা। বিশ্ব যখন নিরব, গাজা তখন রক্তঝরা ঈদের গল্প লিখে চলেছে।

আরআর/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মিয়ানমারে অবৈধভাবে পণ্য পাচারের সময় ১১ জনকে আটক করেছে নৌবাহিনী Sep 16, 2025
img
চবিতে ‘হোস্টেল সংসদ’ নির্বাচনের ঘোষণা Sep 16, 2025
img
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ Sep 16, 2025
img
বিশ্ববাজারে ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম Sep 16, 2025
img
দুই জয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে শ্রীলঙ্কা, খালি হাতে বিদায় নিল হংকং Sep 16, 2025
img
ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় বৃদ্ধি করল এনবিআর Sep 16, 2025
img
ইভ্যালি থেকে বেরিয়ে একই কৌশলে প্রতারণা, নারী গ্রেপ্তার Sep 16, 2025
img
এশিয়া কাপ জিতেনি বাংলাদেশ গুগোল করে নিশ্চিত হলেন ট্রট Sep 16, 2025
img
ড. ইউনূস ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বপ্ন বিনষ্ট হবে : রাশেদ খান Sep 16, 2025
img
ডাকসুর ভোট ম্যানুয়ালি গণনার জন্য উমামার লিখিত আবেদন Sep 16, 2025
img

মাসুদ সাঈদী

জনগণের ভালোবাসা অর্জন করুন, তাহলে নির্বাচন বর্জনের দরকার হবে না Sep 16, 2025
img
আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ Sep 16, 2025
img
আগস্টে ৪৯ মামলায় জড়িত ৩১১ দুর্নীতিবাজ Sep 15, 2025
img
১৫ কেজির কোরাল মাছ বিক্রি ১৮ হাজারে Sep 15, 2025
img
শ্রীলঙ্কার সামনে হংকংয়ের ১৫০ রানের চ্যালেঞ্জ Sep 15, 2025
img
নিকুঞ্জে নাগরিক জাগরণ: হারানো শান্তি ফিরে পাওয়ার গল্প Sep 15, 2025
img
সুপার ফোরে খেলবে বাংলাদেশ, আত্মবিশ্বাসী কোচ Sep 15, 2025
img
ম্যাচের আগে বাংলাদেশের প্রশংসায় জনাথন ট্রট Sep 15, 2025
img
অসুস্থ অমিতাভকে ২০০ জন ৬০ ব্যাগ রক্ত দিয়েছিলেন Sep 15, 2025
img
অতিরিক্ত ৬ বছরের কারাভোগ শেষে ভারতে ফিরলেন রামাতা Sep 15, 2025