লস অ্যাঞ্জেলেসে এবার সেনা মোতায়েনের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

অভিবাসীবিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। বিক্ষোভ দমনে এরইমধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাম্প ডেভিডে যাওয়ার সময় লস অ্যাঞ্জেলেসে চলমান বিক্ষোভ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ কথা বলেন।

লস অ্যাঞ্জেলেসে সেনাবাহিনী পাঠানোর পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সর্বত্র আমাদের সৈন্যরা থাকবে।’

ট্রাম্প বলেন, আমরা আমাদের দেশে এমন কিছু ঘটতে দেব না... যা আমাদের দেশ এবং আমাদের নাগরিকদের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে, আমরা খুব শক্তিশালী হব।

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের যা যা প্রয়োজন তা আমরা সব পাঠাব। গত রাতে লস অ্যাঞ্জেলেসে আমরা খুব কাছ থেকে দেখেছি, সেখানে প্রচুর সহিংসতা ছিল এবং এটি আরও খারাপ হতে পারত।’

বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে পারে কি না জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা খুব গভীরভাবে এটি পর্যবেক্ষণ করব। ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমের সঙ্গে বিতর্কের বিষয়ে ট্রাম্প জানান, তিনি নিউসমকে ফোন করে বলেছেন আপনাকে এই সহিংসতা থামাতে হবে, অন্যথায় আমি সৈন্য পাঠাবা এবং আমরা তাই করব।

বিবিসি বলছে, রোববার স্থানীয় সময় বিকেলে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য ও পুলিশের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তারা ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ও পুলিশের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন সাইনবোর্ড তুলে ধরেছেন। কোথাও কোথাও বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশকে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) অভিযান ঘিরে লস অ্যাঞ্জেলসে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

আইসিই হলো সেই ফেডারেল সংস্থা, যারা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আটক করে দেশে ফেরত পাঠানোর কাজ করে।

মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থার অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যারামাউন্ট এলাকায় শুক্রবার রাতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ শনিবার তীব্র আকার ধারণ করে। ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজপথ।

এক পর্যায়ে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে নিরাপত্তাকর্মীরা। করা হয় ব্যাপক লাঠিচার্জ। বিক্ষোভকারীরা পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। গাড়িতেও ধরিয়ে দেয়া হয় আগুন।

বিবিসি বলছে, টানা দুই দিন বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ডের দুই হাজার সদস্য মোতায়েনের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে প্রেসিডেন্টের এ পদক্ষেপের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম।

তিনি বলেন, এটি রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বে হস্তক্ষেপ এবং জনসাধারণকে ভয় দেখানোর চেষ্টা। আইসিই শহরে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ তার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ডেমোক্রেট এই নেতা বলেন, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উসকানিমূলক এবং এতে কেবল উত্তেজনা বাড়বে।

আরএম



Share this news on:

সর্বশেষ

img
ফেনীতে নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৯ Nov 18, 2025
img

প্রেস সচিব শফিকুল আলম

অন্তর্বর্তী সরকার কয়েক দশকের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সরকার Nov 18, 2025
img
কোনো ষড়যন্ত্রই ধানের শীষের বিজয় ঠেকাতে পারবে না : মিলন Nov 18, 2025
img
শ্রম আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশের গেজেট জারি Nov 18, 2025
img
ভারত ম্যাচের আগে ফেসবুকে হামজার বিশেষ বার্তা Nov 18, 2025
img
সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল চত্বরে সেনা–বিজিবির নজরদারি জোরদার Nov 18, 2025
img

গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এমডিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা Nov 18, 2025
img
সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩ ব্যক্তির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ Nov 18, 2025
img
তাইওয়ান ইস্যুতে চীনে থেমে গেল জাপানি চলচ্চিত্রের মুক্তি Nov 18, 2025
img
ট্রাইব্যুনালে আরও তিন মামলা আছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে Nov 18, 2025
img
সিলেট সীমান্তে ৫৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার ভারতীয় মাদক জব্দ Nov 18, 2025
img
গণভোটের ব্যালটে কী ধরনের প্রশ্ন থাকবে, চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ Nov 18, 2025
img
লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা : বিজেপির ‘মিশন বেঙ্গল’ শুরু Nov 18, 2025
img
সংগ্রাম থেকে সাফল্যের শিখরে শেহনাজ গিল Nov 18, 2025
img
পাকিস্তানের মেরুদণ্ড বাবর আজম : শাহীন শাহ আফ্রিদি Nov 18, 2025
img
শুল্ক বাধার মধ্যেই মার্কিন বাজারে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে Nov 18, 2025
img
চট্টগ্রামে যোগ দিলেন নতুন জেলা প্রশাসক Nov 18, 2025
img
কুড়িগ্রামে নাশকতার পরিকল্পনার সময় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার Nov 18, 2025
img
নিখোঁজের ৩৩ বছর পর বাড়ি ফিরলেন মোবারক হোসেন Nov 18, 2025
img
রাজধানীতে ১০ মাসে ১৯৮ হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি Nov 18, 2025