বাংলাদেশে আন্দোলনকারী নিউটন দাস পশ্চিমবঙ্গে ভোটার হিসেবে শনাক্ত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সেখানে এমন একজন ভোটার মিলেছে, যিনি বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লব নামে পরিচিত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য হিন্দু।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নিউটন দাস নামের ওই যুবক পশ্চিমবঙ্গের কাকদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত। এই কাকদ্বীপের অবস্থান সুন্দরবনের কাছে, যে বনভূমি দুই দেশের সীমানাতেই পড়েছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ক্ষমতার পটপরিবর্তন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নিউটন দাসের বেশ কয়েকটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া গেলেও এই তরুণ দাবি করেছেন, তিনি ভারতের নাগরিক।

তবে তিনি অস্বীকার করেননি বাংলাদেশের বিক্ষোভে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার কথা।

নিউটন দাস একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘পৈতৃক সম্পত্তিসংক্রান্ত সমস্যার জন্য আমি ২০২৪ সালে বাংলাদেশে গিয়েছিলাম এবং সেখানে বিপ্লবের মধ্যে পড়ে যাই।’

আমি ২০১৪ সাল থেকে কাকদ্বীপে ভোটার, তবে ২০১৭ সালে আমার ভোটার কার্ড হারিয়ে ফেলেছিলাম। ২০১৮ সালে স্থানীয় বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরার সহায়তায় আমি একটি নতুন ভোটার কার্ড পাই, বলেন তিনি।

হিন্দু লিখেছে, নিউটনের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি ২০১৬ সালের বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরাকে ভোট দেন। তবে তিনি বর্তমানে ভারতে আছেন নাকি বাংলাদেশে আছেন, তা স্পষ্ট করেননি।

নিউটনের এক চাচাতো ভাই তপন দাস বলেন, তার ভাই বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং দুই দেশেই ভোট দিয়ে থাকেন। তার এই বক্তব্য নিউটনের কথার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে হিন্দুর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
কাকদ্বীপের বাসিন্দা তপন সাংবাদিকদের বলেন, ‘মহামারির পর নিউটন জমি বিক্রি করার জন্য এখানে এসেছিলেন, তারপর আর এখানে আসেননি। তার জন্ম বাংলাদেশে, তাই তিনি সেখানেও ভোটার। দুই দেশে ভোটার তালিকায় নাম লেখানো তারই ভুল।’

এই ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) অভিযোগ তুলেছে, পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় বাংলাদেশিদের নাম লিখিয়েছে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস।

বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘লাখ লাখ বাংলাদেশি এখন পশ্চিমবঙ্গের ভোটার।’ বিজেপি নেতা শুভেন্দু এও দাবি করেন, ‘বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের’ সদস্য সাদ শেখ মুর্শিদাবাদ জেলার ভোটার তালিকায় ছিল।’

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সোশাল মিডিয়া পোস্টে নিউটনের ঘটনাকে কথিত ‘এগিয়ে বাংলা মডেলের আরেকটি উজ্জ্বল উদাহরণ’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনে এই নিউটনকে লাঠি হাতে দেখা গিয়েছিল, সেই ব্যক্তিই আজ কাকদ্বীপের নিবন্ধিত ভোটার।

তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত রক্ষা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধের কাজ সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর (বিএসএফ) ওপর ন্যস্ত। তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ বলেন, এই মানুষগুলো স্থল, নৌ বা আকাশপথ—যেভাবেই আসুক না কেন, এর দায়িত্ব বিএসএফ ও কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্য প্রশাসন অবশ্যই নিজের দায়িত্ব পালন করবে।

এফপি/ টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
২৩ বছরে পা দিলো আরাভ, ছেলেকে নিয়ে আবেগঘন বার্তা অক্ষয় কুমারের Sep 15, 2025
img
পরিবেশ দূষণরোধে প্লাস্টিক বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করতে হবে : চসিক মেয়র Sep 15, 2025
img
প্রথমবার ঢাকায় আসছেন অভিনেত্রী হানিয়া আমির! Sep 15, 2025
img
হেফাজত আমিরের বক্তব্যে জামায়াতের প্রতিবাদ Sep 15, 2025
img
ঢাকা বিভাগের কাউন্সিলরশিপ গ্রহণ করলেন বুলবুল Sep 15, 2025
img
সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১৫৬১ Sep 15, 2025
img
শুধু উচ্চকক্ষের জন্য পিআর পদ্ধতি চাইছে এনসিপি: জাভেদ রাসিন Sep 15, 2025
img
টানা ৫ দিন ভারি বৃষ্টির আভাস Sep 15, 2025
img
মাত্র ১৩ বছরেই শতকোটি টাকার মালিক আরাধ্যা বচ্চন Sep 15, 2025
img
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ফ্ল্যাট-জমি জব্দ, অবরুদ্ধ ব্যাংক হিসাব Sep 15, 2025
img
আবুধাবিতে ওমানকে ১৭৩ রানের লক্ষ্য দিল আমিরাত Sep 15, 2025
img
বাগদান সারলেন হুমা কুরেশি! Sep 15, 2025
img
জাকসু নির্বাচনে কারসাজি, এক দলকে জিতিয়ে আনতে সব মনোযোগ ছিল: শিক্ষক নেটওয়ার্ক Sep 15, 2025
img
নেটফ্লিক্স, থ্রিলার ও মহাকাব্যিক ছবিতে সানি দেওলের ব্যস্ত সময় Sep 15, 2025
img
বেনেটের সেঞ্চুরি মিসেও জিম্বাবুয়ের বড় জয় Sep 15, 2025
img
পিআর একটি সুপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যান : রিজভী Sep 15, 2025
img
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সংস্কার সম্পন্ন জরুরি: ইইউ রাষ্ট্রদূত Sep 15, 2025
img
এনসিপির সংগঠক শিরীনকে সাময়িক অব্যাহতি Sep 15, 2025
img
নির্বাচন যারা বানচাল করার চেষ্টা করছে তারা সচিবালয়ে অবস্থান করছে: ফারুক Sep 15, 2025
img
চ্যাম্পিয়ন হয়েও মূল পর্বে খেলছে না ঋতুপর্ণা-মনিকাদের রাঙামাটি Sep 15, 2025