যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে যত দিন লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ পরিস্থিতি থাকবে, তত দিন সেখানে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন থাকবে। মঙ্গলবার এ ইস্যুতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তিনি।
এদিন ওয়াশিংটনে ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে ট্রাম্প বলেছেন, “লস অ্যাঞ্জেলেস যখন সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত হবে, তখন ন্যাশনাল গার্ডও সরে যাবে। যদি সেখানে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানো না হতো, তাহলে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখতে হতো আমাদের। এতদিনে পুরো লস অ্যাঞ্জেলেস জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয়ে যেতো।”
গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের পর বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসবের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী নথিবিহীন অভিবাসীদের আটক করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সংক্রান্ত একটি আদেশও ছিল।
ট্রাম্প এই আদেশে স্বাক্ষর করার পর দেশজুড়ে অভিযানে নামে পুলিশ ও মার্কিন কাস্টমস বিভাগের আইন প্রয়োগকারী শাখা আইসিই। গত কয়েক মাসে নিউইয়র্ক, টেক্সাসসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হাজার হাজার নথিবিহীন অভিবাসীকে, তাদের মধ্যে অনেককে ফেরতও পাঠানো হয়েছে।
গত ৬ জুন শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস জেলার প্রধান শহর লস অ্যাঞ্জেলেস সিটির শহরতলী এলাকা প্যারামাউন্টে নথিবিহীন অভিবাসীদের শনাক্ত ও আটক করতে অভিযানে নামেন পুলিশ ও আইসিই সদস্যরা। তবে অভিযানের শুরুতেই তারা ব্যাপক প্রতিরোধের সম্মুখীন হন। প্যারামাউন্টের বাসিন্দারা তীব্র বিক্ষোভের পাশাপাশি পুলিশ ও আইসিই সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল, বোতল ও মলোটভ ককটেল বা পেট্রোল বোমা ছুড়তে থাকেন।
অবস্থা বেগতিক দেখে পরের দিন পুলিশ ও আইসিই সদস্যদের সহায়তার জন্য মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন আধা সামরিক বাহিনী হাজার ন্যাশনাল গার্ডের ২ হাজার সদস্যকে মোতায়েনের নির্দেশ দেন ট্রাম্প। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার পরিবর্তে সংঘাত আরও বাড়তে থাকে।
এই অবস্থায় ৯ জুন সোমবার লস অ্যাঞ্জেলেসে আরও ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড এবং তাদের সঙ্গে ৭০০ মেরিন সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাম্প।
এদিকে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোনা না করে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করায় শুরু থেকেই এর বিরোধী ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম। ইতোমধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার রাজধানী শহর সান ফ্রান্সিসকোতে এ ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মাশলাও করেছেন তিনি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বৈরাচারের মতো আচরণ করছেন, প্রেসিডেন্টের মতো নয়। আমরা আদালতের মাধ্যমে তাকে স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছি।”
এদিকে নিউসাম মামলা করার পর থেকে এই ইস্যুতে ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছে বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারাও। তাদের সেই সমালোচনার জবাবেই মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে এ কথা বলেছেন ট্রাম্প।
পিএ/টিকে