নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম স্বর্ণের বাজার আবারও চাঙা হয়েছে। বিশ্ববাজারে ফের বাড়ছে দাম। মূলত মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, মার্কিন ডলারের দরপতন ও ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা জোরদার হওয়ায় বিশ্ববাজারে মূল্যবান এই ধাতুর দাম ঊর্ধ্বমুখী।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১২ জুন) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩৭৩ দশমিক ০৯ ডলারে। আর ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৩৯৩ দশমিক ৮০ ডলারে বেচাকেনা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই দাম বাড়ার পেছনে একাধিক বৈশ্বিক কারণ কাজ করছে। সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলছে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি।
ইরানকে ঘিরে নতুন করে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ায় ওই অঞ্চল থেকে কিছু মার্কিন কর্মীকে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বদলে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন।
একই সঙ্গে, মার্কিন ডলার সূচকও নেমেছে দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে। এতে ডলারের বিপরীতে স্বর্ণ আরও সস্তা হয়ে উঠেছে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে, যা এর চাহিদা এবং দাম বাড়াতে সহায়ক হয়েছে।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের মে মাসের ভোক্তা মূল্যসূচক প্রত্যাশার চেয়ে কম আসায়, ফেডের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা আরও জোরদার হয়েছে। মূলত পেট্রোলের দাম হ্রাসই মূল্যস্ফীতি কমে আসার পেছনে প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ওন্ডা এশিয়া প্যাসিফিকের সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক কেলভিন ওং বলেন, ‘ডলারের দুর্বলতাই স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি। সিপিআই ডেটা বলছে, ফেড তাদের আগের ভাবনার চেয়ে দ্রুত হারে সুদ কমানোর পথে এগোতে পারে। বাজারের দৃষ্টিতে এটি ইতিবাচক, কারণ এটি স্বর্ণের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ায়।’
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ভূ-রাজনৈতিক টানাপড়েনে স্বর্ণের মতো সুরক্ষিত সম্পদের চাহিদা যে বাড়ছে, তার স্পষ্ট প্রমাণ মিলছে বাজারের সাম্প্রতিক গতিপ্রবাহে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে স্বর্ণের দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল।
এদিকে বিশ্ববাজারে স্পট সিলভারের দাম শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৩৬ দশমিক ৩৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া প্লাটিনামের দাম ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২৭১ দশমিক ১৫ ডলারে পৌঁছেছে। তবে প্যালাডিয়াম দাম ১ দশমিক ১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৬৮ দশমিক ১৯ ডলারে বেচাকেনা হচ্ছে।
আরএম/এসএন