জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান। দেশটির পার্লামেন্ট মজলিশে ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি বিল তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। মজলিশের সদস্য রুহুল্লাহ মোতেফাকেরজাদেহের বরাত দিয়ে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল ইরনা।
ইরনার প্রতিবেদনে মজলিশের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফের বক্তব্যকেও উদ্ধৃত করা হয়েছে। পার্লামেন্ট অধিবেশন চলার সময় আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি বাতিল সংক্রান্ত একটি বিল তৈরির প্রস্তাব দেন এমপিরা। সেই প্রস্তাবে সায় দিয়ে কালিবাফ বলেন, “এই আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে যতদিন আমরা পেশাদার আচরণের গ্যারান্টি না পাব, ততদিন সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত রাখা উচিত।”
১৯৭০ সালে আইইএ’র সঙ্গে এনপিটি চুক্তি করেছিল ইরান। সে সময় অবশ্য বর্তমান ইসলামপন্থি শাসকগোষ্ঠী শাসনক্ষমতায় ছিল না। ইরানের সর্বশেষ রাজা বা শাহ রেজা পাহালভী তখন ইরানের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান ছিলেন। আইএইএ-এর সঙ্গে এএনপিটি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ইরান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে দেশটি কখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি বিষয়ক প্রকল্প গ্রহণ করবে না এবং আইএইএ-কে সহযোগিতা করবে।
গত ১৩ জুন ভোররাতে ইরানে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর কিছুক্ষণ পর এক ভিডিওবার্তায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তেহরান পরমাণু অস্ত্র নির্মাণের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে এবং এ অভিযানের উদ্দেশ্য তেহরানকে এ থেকে বিরত রাখা।
গত ৬ জুন আইএইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল— ইরান যে ধরনের বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করছে, তা দিয়ে অনায়াসেই পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব। জাতিসংঘের সংস্থার এ বিবৃতিকেই হামলার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন নেতানিয়াহু। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এক ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, “ইরানে ইসরায়েলি হামলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিয়েছে আইএইএ।”
আরআর/টিকে