মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে হামলার পর চাপের মুখে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছে ইরানি গণমাধ্যম। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ বন্ধের জন্য একপ্রকার মিনতিই করেছেন ট্রাম্প। এজন্য কাতারের আমিরের কাছে সহায়তা চান তিনি। তবে ভিন্নসুরে কথা বলছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার দাবি, ইরান ও ইসরাইল একসঙ্গে শান্তির জন্য ট্রাম্পের কাছে দ্বারস্থ হয়েছে।
ইসরাইল ও ইরানের সংঘাতের দশম দিন গত রোববার (২২ জুন) ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী। হামলার পর ইরানি প্রশাসনকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি জানান, তেহরান যদি মার্কিন হামলার জবাব দেয় তবে ওয়াশিংটন ভয়াবহ সামরিক অভিযান চালাবে।
জবাবে পরদিন সোমবার (২৩ জুন) রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের কড়া পদক্ষেপের শঙ্কায় ছিল বিশ্ব। তবে ঘটে তার বিপরীত।
কিছুক্ষণের মধ্যেই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হঠাৎ ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তে অবাক হন অনেকেই। আবার অনেকের মনে প্রশ্ন, তবে কি ভয়ে পেয়ে গেলেন ট্রাম্প? কোন চাপের মুখে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট?
ইরানি রাষ্ট্রীয় টিভি আইআরএনএ জানায়, ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির জন্য হাতজোড় করেছেন। কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের সফল হামলার পর চাপে পড়ে যুদ্ধবিরতির বার্তা দেন তিনি। গণমাধ্যমটি আরও জানায়, তেহরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়াতে চায় না ওয়াশিংটন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য মতে, ইরানকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত করতে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ কাতারের সহায়তা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিউইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধান বলছে, মূল ভূমিকায় ছিলেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানি। কাতারের আমির শেখ তামিমের সহায়তাও চান ট্রাম্প।
এরপর দোহার কূটনৈতিক উদ্যোগেই ইরান রাজি হয় যুদ্ধ থামাতে। ওয়াশিংটন জানায়, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ তেহরানের সঙ্গে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে যোগাযোগ করেন।
যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করছেন, ইরান ও ইসরাইল যুদ্ধবন্ধের জন্য তার কাছে অনুরোধ করেছিল। সামাজিক মাধ্যমে তিনি জানান, বিশ্ব ও মধ্যপ্রাচ্য উভয়ই আসল বিজয়ী। দুই দেশের জন্য শান্তি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি কামনা করেন তিনি। এছাড়া দুই দেশের ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানান ট্রাম্প।
টিকে