থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে শনিবার সরকারবিরোধী হাজারো বিক্ষোভকারী দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। সম্প্রতি তার একটি কূটনৈতিক ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

কম্বোডিয়ার একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবীদ সিনাওয়াত্রার সঙ্গে হওয়া একটি ফোনালাপ ফাঁস করেন, যেখানে সিনাওয়াত্রাকে তাকে আংকেল সম্বোধন করতে শোনা যায়, সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের এক সেনা কমান্ডারকে তার প্রতিপক্ষ বলে উল্লেখ করেন।

এরপর ৩৮ বছর বয়সী রাজবংশীয় এই প্রধানমন্ত্রী কম্বোডিয়ার ওই রাজনীতিবীদের কাছে নতি স্বীকার ও থাই সেনাবাহিনীকে ছোট করেছেন দাবি করে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাজনৈতিক দল তার সঙ্গে থাকা জোট থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়।এতে সংসদে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা সংকটের মধ্যে পড়েছে।

প্রায় ১০ হাজার বিক্ষোভকারী এদিন রাজধানীর সড়ক আটকে ‘অসৎ প্রধানমন্ত্রী, দূর হও’ বলে স্লোগান দেয়। এ সময় মঞ্চে উঠে একজন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।

বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই ছিলেন প্রবীণ এবং আন্দোলনটি নেতৃত্ব দেন ‘ইয়েলো শার্ট’ আন্দোলনের পুরনো নেতারা, যারা একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে সিনাওয়াত্রার বাবা থাকসিনকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ভূমিকা রেখেছিলেন।

শনিবার দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্দোলন চলা এলাকায় প্রায় এক হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং নগর কর্তৃপক্ষের ১০০ কর্মী সেখানে রয়েছেন।

এদিকে সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের উত্তরে হওয়া বন্যা পরিদর্শনের আগে ব্যাঙ্ককে বলেন, ‘যতক্ষন পর্যন্ত এটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন থাকবে, এটি তাদের নাগরিক অধিকার।’

সীমান্ত এলাকার সেনা কমান্ডারকে প্রতিদ্বন্দী বলার পর সিনায়াওয়াত্রা এক বিবৃতিতে ক্ষমা চেয়েছেন ও নিজেকে অনুতপ্ত দাবি করেছেন। তিনি সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঐক্যের কথাও জানিয়েছেন।

এ মাসে কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে তার ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর তিনি বিতর্কের স্বীকার হন, তার বড় সমর্থক ভূমজাইথাই পার্টি তাকে পরিত্যাগ করেছে।

কম্বোডিয়ার সঙ্গে থাইল্যান্ডের দীর্ঘদিন থেকেই উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তবে গত মাসে সীমান্তে কম্বোডিয়ার সেনা সদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় তা সংঘাতে রূপ নিয়েছে। থাইল্যান্ডে ২০২১ সালের পর থেকে বড় ধরনের বিক্ষোভ আর দেখা যায়নি। ওই সময় রাজতন্ত্র সংস্কারের দাবিতে তরুণদের নেতৃত্বে আন্দোলন হয়েছিল, যা পরে অনেক নেতাকে কঠোর রাজদ্রোহ আইনে দণ্ড দিয়ে থামিয়ে দেওয়া হয়।

মাত্র এক বছর আগে আদালতের আদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী অপসারিত হলে সিনাওয়াত্রা প্রধানমন্ত্রী হন। এরপর দীর্ঘ ১৫ বছরের নির্বাসন শেষে তার বাবা দেশে ফেরেন। পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা হলেন সিনাওয়াত্রা পরিবারের চতুর্থ সদস্য, যিনি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ধামরাইয়ের আমতলা বাজারে আগুন Nov 11, 2025
৫ দফা কর্মসূচি যে কারণে দিলো জামায়াত! Nov 11, 2025
সরকার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবে- পরিবেশ উপদেষ্টা Nov 11, 2025
সোলজার নিয়ে আলোচনা মধ্যেই শাকিব খানের ‘প্রিন্স’ সিনেমাকে অমিতাভের শুভকামনা Nov 11, 2025
img
মধ্যরাতে রাজধানীর আরেক স্থানে বাসে আগুন Nov 11, 2025
img
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা ৫ ঘণ্টা কাজ করে পারিশ্রমিক পাবেন ৮ ঘণ্টার : জামায়াত আমির Nov 11, 2025
img
জারাকে নিয়ে মধ্যরাতে সারজিসের ফেসবুক পোস্টে চমক Nov 11, 2025
img
ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর গুঞ্জন, মুখ খুললেন সানি দেওল Nov 11, 2025
img
শিল্প যে বোঝে, সে ধ্বংসবিরোধী মানুষ : মোশাররফ করিম Nov 11, 2025
img
গ্রেপ্তারের ৩ দিন পর প্রাণ গেল স্ত্রী-সন্তানের, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে জানাজায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা Nov 11, 2025
img
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন করতে পারবেন যা Nov 11, 2025
img
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নেপাল সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা জারি করল ভারত Nov 11, 2025
img
হাসপাতাল থেকে তুলে নেয়া নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতাকে থানায় দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার ৩ Nov 11, 2025
img
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত Nov 11, 2025
img
ভোটের প্রচারণায় প্রথমবারের মতো পোস্টার ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ Nov 11, 2025
img
পিছিয়ে গেল বিপিএলের নিলাম Nov 11, 2025
img
ক্ষুদে ফুটবলার সোহানকে বিকেএসপি স্কলারশিপ দেয়া হবে : ক্রীড়া উপদেষ্টা Nov 11, 2025
img
এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ৪টি ককটেল বিস্ফোরণ, একজনকে গণপিটুনি Nov 11, 2025
img
প্রাথমিকে শারীরিক শিক্ষা এবং সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট Nov 11, 2025
“ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা থেকে নায়ক হয়েছি Nov 10, 2025