ইরানের ইস্পাহান পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্র কেন ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করেনি তা প্রথমবারের মতো জানালো পেন্টাগন। পরমাণু কেন্দ্রটি মাটির অত্যন্ত গভীরে হওয়ায় ওই বোমার কার্যকারিতে নিয়ে সন্দেহ থেকেই এ সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়।
ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যেন তা সহজে শত্রুর আঘাতে ধ্বংস না হয়। ইরানের কৌশলী নির্মাণ দক্ষতার কথা স্বীকার করলো যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত ইস্পাহানে পারমাণবিক স্থাপনাটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যে সেখানে প্রচলিত ‘বাংকার বাস্টার’ বোমাও কাজ নাও করতে পারে, এমন সন্দেহ থেকেই হামলার কৌশল বদলায় যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন সিনেটকে দেয়া গোপন ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন। বলেন, ওই কেন্দ্র এত গভীরে যে, এমওপি বা ম্যাসিভ অর্ডনেন্স পেনেট্রেটর এর মত বোমাও সেখানে পৌঁছাতে পারত না। একারণে, ইস্পাহান লক্ষ্য করে পাঠানো হয় সাবমেরিন থেকে ছোড়া টমাহক ক্রুজ মিসাইল।
মার্কিন গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা সূত্রগুলো বলছে, ইস্পাহানের এই ভূগর্ভস্থ স্থাপনাতেই মজুত রয়েছে ইরানের প্রায় ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, যা পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ইরান যেন এই ইউরেনিয়াম অস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্যই হামলা চালানো হয়। তবে ইস্পাহানের গভীরতা ও প্রতিরক্ষা কাঠামোর কারণে সেখানে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে।
মার্কিন বি-২ বোমারু বিমানগুলো ইরানের ফোরদো এবং নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ডজনখানেক বাংকার বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করেছিল। কিন্তু ইস্পাহানে শুধু একটি মার্কিন সাবমেরিন থেকে টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
এদিকে বিস্ফোরক এক মন্তব্য করে আবারও বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দাবি করেন, তিনি চাইলেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যা করতে পারতেন, কারণ তিনি জানতেন খামেনি কোথায় লুকিয়ে ছিলেন।কিন্তু ‘বিশ্ব রাজনীতির ভারসাম্য’ বিবেচনায় তিনি নিজেই সেই আক্রমণ ঠেকান। ট্রুথ সোশ্যাল-এ পোস্ট করে বলেন, খামেনিকে নির্মম ও করুণ মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছেন তিনি।
তবে এইসব দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খামেনি। যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধ শুরু করে কিছুই অর্জন করতে পারেনি উল্লেখ করে বলেন ইরানই যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছে। আর এতেই চটেছেন ট্রাম্প। জানান, তিনি ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার চিন্তাভাবনা করছিলেন। খামেনির ‘মিথ্যা বিজয় ঘোষণার’ পর সেই পরিকল্পনা বাতিল করেছেন বলেও জানান ট্রাম্প।
এফপি/এস এন