'বিএনপি ইজ ডেমোক্রেসি, বিএনপি ইজ ফ্রিডম, বিএনপি ইজ ডেভেলপমেন্ট' বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) জুলাই আন্দোলনের শহীদ ছাত্রদের স্মরণে ছাত্রদলের আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, কেবল একটা কথা বলি- আমরা তাদের অবদান যেন স্মরণে রাখি। আমার খুব দুঃখ হয় যখন দেখি আমাদের আহতরা বলে ‘আমরা সাহায্য-সহায়তা পাইনি।’ এই সরকার কেন পারল না এখনো সহায়তা দিতে? ছাত্রদলের ১৪২ জন শহীদের কেউ গেজেটেড হয়নি। তাহলে কার নাম গেজেটেড হচ্ছে?
তিনি বলেন, বিএনপি ইজ ডেমোক্রেসি, বিএনপি ইজ ফ্রিডম, বিএনপি ইজ ডেভেলপমেন্ট-এটা মনে রাখবেন। আমরাই করেছি, আমরাই করব। তাই আমরা কারও পাতা ফাঁদে পা দেব না। উত্তেজিত হবো না, প্ররোচিত হবো না। তারা চায় গণতন্ত্রের উত্তরণ ব্যাহত হোক। নির্বাচন নিশ্চয়ই ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। আপনারা ধৈর্য হারাবেন না, উত্তেজিত হবেন না, প্ররোচিত হবেন না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০ হাজার নেতাকর্মীকে এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং ও বিভিন্নভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় ৬০ লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা মিথ্যা মামলায় আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ৬ বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে আমাদের দেশনেতা তারেক রহমানকে বিদেশে নির্বাসিত করা হয়েছে। এসবের মধ্যেও বিএনপি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আজকে ছাত্রদলের যারা বসে আছেন, সকলের সঙ্গে আমরা কারাগারে ছিলাম। অনেক ছাত্রদল নেতাকর্মী এলাকায়, গ্রামে থাকতে না পেরে শহরে এসে নৈশপ্রহরীর কাজ করেছে, গাড়ি চালক হয়েছে, রিকশা চালিয়েছে, অটো চালিয়েছে। আমার এত বয়সে আমি এতটুকু হতাশ নই। বাংলাদেশের মানুষের এটাই ইতিহাস-লড়াই করে করেই বাংলাদেশের মানুষ বেঁচে থাকে।
স্মরণসভায় এর আগে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।
আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ১৭ বছর যে আন্দোলন হয়েছে তাতে এককভাবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ১৭৬ জন শহীদ রয়েছেন। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ১৪২ জন আছেন। গতকাল গোপালগঞ্জে যে আঘাত হয়েছে তা গণঅভ্যুত্থানের ওপর আঘাত।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিব বলেন, ১৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল আয়োজিত গায়েবানা জানাজায় পুলিশ ও ছাত্রলীগের বাধা উপেক্ষা করে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। পুলিশের বাধা, ছাত্রলীগের হামলা-সব উপেক্ষা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বকশীবাজার ও টিএসসিতে গায়েবানা জানাজায় অংশ নেয় ছাত্রদল। ওইদিন নিহত হন আবু সাঈদ (রংপুর) ও ওয়াসিম আকরাম (চট্টগ্রাম)। এরপর ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রাতভর আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সহায়তা দেন।
তিনি আরও বলেন, ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ ও শহীদ আকরামের কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভায় ছাত্রদল সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। আমি নিজে রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি, দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়েছি। রংপুরে আবু সাঈদের কবর জিয়ারতে গিয়ে জানতে পারি, নির্দলীয় সরকারের চার উপদেষ্টা শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের কথা থাকলেও তারা সময় পাননি। এলাকাবাসী ও স্বজনেরা আমাদের জানিয়েছেন-এই শহীদদের প্রতি বিরোধী ব্যানারের নেতাদেরও কোনো শ্রদ্ধা ছিল না। তারা কেউ কবর জিয়ারতে যাননি। এক বছরের মাথায় এমন দৃশ্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। ছাত্রদল সবসময় শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণে রাখবে এবং রক্তঋণ শোধের সংগ্রামে সামনের কাতারে থাকবে।
স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালসহ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
টিকে/