বন্দুক ঠেকিয়ে রোহিঙ্গাদের বিদেশি নাগরিকত্ব দিচ্ছে মিয়ানমার

অস্ত্রের মুখে মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিদেশি নাগরিকের শ্রেণিবদ্ধ পরিচয়পত্র নিতে বাধ্য করছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। তাদের মিয়ানমারের নাগরিক হওয়ার সুযোগ কেড়ে নেয়া হচ্ছে বলে একটি মানবাধিকার সংস্থার বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এ খবর প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রোহিঙ্গাদের ওপর নিষ্ঠুর আচরণের কারণে এমনিতেই মিয়ানমার বিশ্বব্যাপী নিন্দিত হচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটসের প্রতিবেদন অনুযায়ী,  ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) নামে এই পরিচয়পত্র বলপূর্বক গছিয়ে দেয়ার চেষ্টার খবর এর মধ্যেই রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিয়ানমারের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়াবে।

ফর্টিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, ‘মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়ার একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করার চেষ্টায় লিপ্ত।

ফর্টিফাই গ্রুপ বলছে, ‘রোহিঙ্গাদের কার্যকরভাবে ‘বিদেশি’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে’ এনভিসি নামে এমন পরিচয়পত্র নিতে রোহিঙ্গাদের বাধ্য করছে মিয়ানমার সরকার। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল এবং এনভিসি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের অজুহাত দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধও আরোপ করেছিল।’

বৌদ্ধপ্রধান মিয়ানমারের সরকার প্রতিবেশী ‘বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ’ বলে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু অনেক রোহিঙ্গাই বলছেন, পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের প্রজন্ম কয়েকশ বছর থেকে ধরে বসবাস করছেন।

জঙ্গি হামলার পর চালানো সামরিক অভিযানে বর্বর নিপীড়নের মুখে ২০১৭ সালে সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে রাখাইন রাজ্য ব্যাপকভাবে বিশ্ববাসীর নজরে আসে।

জোর করে পরিচয়পত্র গছানোর অভিযোগ নিয়ে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ তাইয়ের মন্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

তবে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুন তুন নাই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, যে কাউকে বন্দুকের মুখে বা নির্যাতনের মাধ্যমে পরিচয়পত্র নিতে বাধ্য করা হচ্ছে না।

টেলিফোনে তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘এটি সত্য নয় এবং তাই আমার আর কিছু বলার নেই।’

তবে এই খবরে দুই দফায় ভেস্তে যাওয়া বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগে প্রভাব পড়তে পারে। ২২ অগাস্ট দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হলেও সুরক্ষা ও নাগরিকত্ব নিশ্চিত না হওয়ার কথা তুলে কেউ ফিরে যেতে রাজি হয়নি।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: