সৌদি থেকে রিক্ত হয়ে দেশে ফিরলেন আরো ১৫৭ প্রবাসী

সচ্ছল জীবনের আশায় সৌদি আরবে গিয়ে নি:স্ব হয়ে বাড়ি ফিরলেন আরো ১৫৭ প্রবাসী। রোববার মধ্যরাতে এইসব কর্মজীবী নারী-পুরুষদের কেউ বিমান থেকে ঢাকায় নেমেছেন খালি পায়ে। আবার কেউ গায়ে ছিলো আগেরদিন যে পোশাক পরে কাজ করেছিলেন সেটি।

রোববার  রাত ১১ টা ৭ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ। ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের হেড শরিফুল হাসান জানান, ফিরতি এসব প্রবাসকর্মীর অবস্থা ছিলো খুবই শোচনীয় ও বেদনা ক্লিস্ট। পরে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে বিমানবন্দরে তাদের জন্য খাবার সরবরাহসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, সৌদি প্রশাসন প্রতিদিন শত শত বিদেশি কর্মীকে গ্রেপ্তার করছে। রিয়াদ ডিপোর্টেশন ক্যাম্পে এখন হাজারখানেক বাংলাদেশি রয়েছেন।

ফেরত আসা কর্মীদের মধ্যে চাঁদপুরের বাবুল হোসেন বলেন, সৌদিতে ছয়মাসের বৈধ আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) থাকার পরও কর্মস্থল থেকে ধরে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশাসন তার কোনো কথাই শোনেনি।

টাঙ্গাইলের আলিম ও মনির হোসেন, নরসিংদীর মো. জোবাইর, লক্ষ্মীপুরের ফরিদ, মুন্সিগঞ্জের শরিফ হোসেন এবং মেহেরপুরের সেলিম রেজাসহ অনেকেই জানিয়েছেন- বৈধ আকামা থাকা সত্ত্বেও তাদের জোর করে ধরে জেলখানাতে নিয়ে যায় সৌদি পুলিশ। তারপর সেখান থেকে কোনো কথা না শুনে জোর করে দেশে পাঠিয়ে দেয় তারা। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ দূতাবাসও তাদের কোনো সহযোগিতা করেনি।

সৌদি প্রেস এজেন্সির সংবাদ অনুযায়ী, দেশটির কর্তৃপক্ষ তাদের চলমান অভিযানে কাজ ও থাকার নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে প্রায় ৩৮ লাখ বিদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে। ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে এ অভিযান চলছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জুনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫২১ জনকে।

গ্রেপ্তার হওয়া বিদেশিদের মধ্যে ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ৪০ হাজার ১০০ জনকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলেও সংবাদে উল্লেখ করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কূটনৈতিক চ্যানেলে এখনই রিয়াদের সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতা না হলে ভবিষ্যতে ধরপাকড় আরো বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়বে সেখানকার বৈধ-অবৈধ হাজারো বাঙালি।

 

টাইমস/এমএস

Share this news on: