সংখ্যালঘুদের হত্যা করে ২০ বছর ধরে অঙ্গ বিক্রি করছে চীন: জাতিসংঘ

চীনে ২০ বছর ধরে ফালুন গং ও উইঘুর সংখ্যালঘুদের হত্যা করে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। চীনে সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো ধরণের মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে এই বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল।

বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় জার্মান ভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে।

ট্রাইব্যুনালের কাউন্সেল হামিদ সাবি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে (ইউএনএইচআরসি) জানিয়েছেন, ‘বহু বছর চীনজুড়ে জোর করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করা হচ্ছে এমনকি আজও তা অব্যাহত আছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত ফালুন গং এর বন্দি এবং উইগুর সংখ্যালঘু মুসলমানদের এই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়, এতে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জীবন বাঁচাতে অঙ্গ প্রতিস্থাপন একটি বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক বিজয়, কিন্তু দাতাকে হত্যা করা অপরাধ। নির্দোষ ও নিরীহ মানুষদের ধরে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন করা এ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ গণনৃশংসতা।’

ট্রাইব্যুনালের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের বন্দি এবং ফালুন গং ও উইগুর সংখ্যালঘুদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে তারা। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চীন সরকার সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর লোকদের হত্যা করে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে বিক্রি করছে।

বন্দি ও সংখ্যালঘু ছাড়াও জীবিত বা মৃত ব্যক্তির কিডনি, লিভার, হার্ট, ফুসফুস, কর্নিয়া এবং ত্বকের চামড়া বিক্রির জন্য অপসারণ করা হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এই অভিযোগ অস্বীকার করে বেইজিং বলছে, ২০১৫ সাল থেকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতদের অঙ্গও তারা আর ব্যবহার করে না।

আধ্যাত্মিক গোষ্ঠী ফালুং গংকে ২০ বছর আগে নিষিদ্ধ করা হলে এর ১০ হাজার সদস্য বেইজিংয়ে নীরব প্রতিবাদ করতে আসেন। এরপর এদের বেশিরভাগকে জেলে পাঠানো হয়।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান জেফ্রি নিস বলেন, সরকার, জাতিসংঘ এবং এর সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা এটি প্রমাণের জন্য আর অন্ধ দৃষ্টি রাখতে পারবে না।

প্রতিবছর চীনা নাগরিকদের পাশাপাশি প্রচুর বিদেশি চীনে গিয়ে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেন। লন্ডনে চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেন, সরকারি বিধিবিধানে শর্ত রাখা হয়েছে মানব অঙ্গ দান স্বেচ্ছাসেবায় এবং বিনা অর্থে হতে হবে।

 

টাইমস/এএইচ

Share this news on:

সর্বশেষ