উপাচার্যের ‘জয় হিন্দ’ বিষয়ে যা বলল রাবি প্রশাসন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের(রাবি) উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শেষে ‘জয় হিন্দ’ বলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে উপাচার্যের ‘জয় হিন্দ’ এর ব্যাখ্যা দিয়ে সোমবার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়া হয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে ‘কালচার, পিস অ্যান্ড এডুকেশন: ফ্রম দ্য পারস্পেকটিভ অব পিপলস হিস্ট্রি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উপাচার্য। এতে তিনি জয় বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধুর পর ‘জয় হিন্দ’ বলে বক্তব্য শেষ করেন, এমন অভিযোগ ওঠে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ এবং জন ইতিহাসচর্চা কেন্দ্র তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের ইতিহাসবিদ, শিক্ষক ও গবেষকেরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ, রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব ভাট্টী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ‘জয় হিন্দ’ এর ব্যাখ্যায় দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে রাবি ইতিহাস বিভাগ ও জন ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী ‘Culture, Peace and Education: From the Perspective of Peoples’ History’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সভাপতির বক্তৃতায় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ‘জয় হিন্দ’ বলেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সংবাদটি অত্যন্ত চতুর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিকৃত করে উপস্থাপনের মাধ্যমে দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উপাচার্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সর্বাঙ্গীন সহযোগিতা, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধকালীন এক কোটি শরণার্থীর খাদ্য-বাসস্থানের যোগান দান, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহযোগিতাকরণ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অকুণ্ঠ সমর্থন জ্ঞাপন, সর্বোপরি বিশ্বজনমত সৃষ্টির দ্বারা স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্তকরণে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও তার সরকারসহ সে দেশের জনগণের প্রতি অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাদের এই সহযোগিতার জন্য ভারত রাষ্ট্রের দীর্ঘায়ু কামনা করতে গিয়ে উপাচার্য মহোদয় অতি প্রাসঙ্গিকভাবেই ‘জয় হিন্দ’ শব্দযুগল ব্যবহার করেন এবং তা তিনি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ উচ্চারণের পর বলেন। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান স্থিতিশীল অবস্থা ও দেশের সার্বিক উন্নয়ন-অগ্রগতি রোধে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে এই ধরনের বিভ্রান্তি ও সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: