সেলিম প্রধানের বাসায় মিলল ২৯ লাখ টাকা, ৮ কোটির চেক ও হরিণের চামড়া

অনলাইনভিত্তিক ক্যাসিনোর ব্যবসার মূল হোতা সেলিম প্রধানের গুলশান-২-এর বাসা কাম অফিস মমতাজ ভিশনে নগদ সাত লাখ টাকা, ৭৭ লাখ টাকা সমমানের বিদেশি মুদ্রা ও আট কোটি টাকার চেক পেয়েছে র‍্যাব। এ ছাড়া সেখানে বিদেশি মদ ও হরিণের চামড়া পাওয়া গেছে। তাছাড়া বনানীর বাসায় অভিযান চালিয়ে ২১ লাখ টাকা জব্দ করেছে র‍্যাব।

মঙ্গলবার বিকাল চারটার দিকে সেখানে থাকা র‍্যাব সদস্যরা এই তথ্য জানান।

র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ও র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম লেন, ‘সেলিম প্রধানের গুলশান ও বনানীর বাসায় ও অফিসে অভিযান চালিয়ে ৪৮টি বিদেশি মদের বোতল, ৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা এবং বনানীর অফিস থেকে ২১ লাখ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।'

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তার (সেলিম প্রধান) কাছ থেকে ২৩টি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা যার মূল্য ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার ২৩ টাকা, তার পাসপোর্ট পেয়েছি মোট ১২টি মেয়াদ অতিক্রম করায় সেগুলো জমা হয়েছে। ১৩টি ব্যাংকের ৩২টি চেক বই পাওয়া গেছে। একটি বড় সার্ভার যেটিতে অনলাইনের গেম সংরক্ষণের ব্যবহার করা হতো। এছাড়াও ২টি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে।’

সোমবার দুপুরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট থেকে ব্যবসায়ী সেলিমকে নামিয়ে আনে র‍্যাব-১-এর একটি দল। ওই দিন বেলা দেড়টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে সেলিম প্রধানের ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিল। টিজি ৩২২ নম্বর ফ্লাইট থেকে তাকে নামানো হয়। বিজনেস ক্লাসের যাত্রী ছিলেন তিনি।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর সোমবার রাতে তাকে নিয়ে মমতাজ ভিশনে অভিযানে যায় র‍্যাব। এর মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে সেলিম প্রধানের বনানীর আরেকটি বাসায় অভিযান চালিয়ে আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। ওই বাসা থেকে জব্দ করা হয় প্রায় ২১ লাখ টাকা। পরে আখতারুজ্জামানকে সেলিম প্রধানে গুলশানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেলিম প্রধানও ওই বাসায় আছেন।

অনলাইনে বিশ্বের সুপরিচিত ক্যাসিনোগুলোর সঙ্গে জুয়াড়িদের যুক্ত করার কাজ করতেন সেলিম। তিনি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ‘প্রধান গ্রুপ’-এর কর্ণধার। তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারস লিমিটেড, পি২৪ ল ফার্ম, এইউ এন্টারটেইনমেন্ট, পি২৪ গেমিং, প্রধান হাউস ও প্রধান ম্যাগাজিন। এর মধ্যে পি২৪ গেমিংয়ের মাধ্যমে তিনি জুয়াড়িদের ক্যাসিনোয় যুক্ত করতেন।

পি২৪ গেমিং শুরুতে বিনোদনমূলক সফটওয়্যার তৈরি ও প্রকাশ করত। এখন তারা এশিয়ায় দ্রুত বড় হতে থাকা ক্যাসিনো কারবারে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এশিয়ার লাইভ ক্যাসিনো মার্কেটে প্রতিষ্ঠানটি যেন এক নম্বরে যেতে পারে, সেই চেষ্টা আছে তাদের। পি২৪-এর সঙ্গে বাংলাদেশে ১৫০টি অপারেটর এবং ক্যাসিনো যুক্ত আছে। অনলাইনে বিশ্বের সবচেয়ে প্রচলিত ক্যাসিনোর সঙ্গে যুক্ত করে দেয়ার ক্ষমতা আছে তাদের। জুয়াড়িদের মুঠোফোনে লাইভ ক্যাসিনোতে যুক্ত করে দেয়ার সুবিধা তারা এনেছে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর।

 

টাইমস/এসআই

 

 

Share this news on: