দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে পেঁয়াজের বাজারে আগুন

ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেয়ায় দেশটি থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে। এরমধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ও নেপালের। গত দু’সপ্তাহে কয়েক গুণ বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম।

২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। ওই দিন বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২২ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা হয়। পরদিন তা আরও বেড়ে ১২০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

কলম্বোতে এখন পেঁয়াজের দাম শ্রীলঙ্কার মুদ্রায় ২৮০ থেকে ৩০০ রুপি । আর এই সংকটের জেরে বিকল্প দেশ থেকে আমদানির তোড়জোড় শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।

শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যেই চীন এবং মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে বলে জানিয়েছেন এসেনশিয়াল ফুড কমোডিটিজ ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জি রাজেন্দ্রন। আর বাংলাদেশ পেঁয়াজ আমদানি করছে মিয়ানমার, চীন, মিশর ও তুরস্ক থেকে।

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর বাসিন্দা সীমা পোখারেল বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, পেঁয়াজের মূল্য ব্যাপকভাবে বাড়ছে। গত মাসের তুলনায় এবার দামটা দ্বিগুণ।

যে কারণে এই সংকট

আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজের চাষ হয় মহারাষ্ট্রে। তারপরে ক্রমান্বয়ে রয়েছে কর্নাটক, গুজরাট, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো রাজ্য। আবার এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদক দেশও ভারত। তাই ভারত বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, পাকিস্তান, মিয়ানমারের মতো দেশ পেঁয়াজের জন্য ভারতের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

ভারতের পেঁয়াজ উৎপাদক রাজ্যগুলোতে অতিবৃষ্টি তো হয়েছেই, বর্ষার নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক পরেও ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এখনও বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্য বন্যার কবলে। ফলে পেঁয়াজের ফলন মার খেয়েছে। আবার দেরিতে বৃষ্টিপাত হওয়ায় পেঁয়াজ উঠতেও দেরি হয়েছে। ফলে ভারতেই পেঁয়াজের দাম কার্যত আকাশছোঁয়া।

ভারতের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের মতে, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষির ঘরে ওঠার পর বাজারে না আসা পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য ভাবে দাম কমার সম্ভাবনা কার্যত নেই।

মুম্বাই অনিয়ন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অজিত শাহ বলেন, ‘ফসল উঠতে উঠতে অন্তত নভেম্বরের মাঝামাঝি হয়ে যাবে। তার আগে পর্যন্ত সরকার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলবে বলে মনে হয় না। একমাত্র ভারতে দাম কমলে তবেই আবার রপ্তানি কথা ভাববে ভারত। কিন্তু সেটা সময় সাপেক্ষ।’

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ