করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তুলনামূলকভাবে অত্যন্ত দ্রুততম সময়ে ভ্যাকসিন তৈরি করেছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি। সবকিছু ঠিক থাকলে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ভারতে নভেম্বর-ডিসেম্বরে পাওয়া যাবে। দাম হবে এক হাজার টাকা। ২০২১ এর প্রথমে তা সাধারণ লোকের কাছে পৌঁছবে।
ভারতে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন তৈরি করবে মহারাষ্ট্রে পুনের সংস্থা সেরাম ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া। সংস্থার প্রধান আদার পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল সফল হলে নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে ভ্যাকসিন বাজারে এসে যাবে। তারা যে পরিমাণ ভ্যাকসিন উৎপাদন করবেন, তার অর্ধেক ভারতের জন্য থাকবে। বাকি অর্ধেক বিশ্বের অন্য দেশে পাঠানো হবে।
পুনাওয়ালা বলছেন, এই ভ্যাকসিনের দাম হবে এক হাজার টাকা। এখন করোনা পরীক্ষা করতে আড়াই হাজার টাকা লাগে।
পুনাওয়ালার দাবি. “আমরা লাভ করার জন্য ভ্যাকসিনের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করব না। গোটা বিশ্ব মহামারির সঙ্গে লড়াই করছে। আমাদের দর্শন হলো, এখন কম দামে ভ্যাকসিন দেয়া। মহামারি শেষ হয়ে গেলে তখন বাণিজ্যিক স্বার্থের কথা ভাবা যাবে। তার আগে নয়। আমরা গত তিন মাস ধরেই এই ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক অন্য টিকার উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছি।”
করোনাভাইরাসের এই ভ্যাকসিন বাজারে আসার পর প্রথমে কারা পাবেন, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এনিয়ে পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, সেটা সরকার ঠিক করবে। এখনও এ নিয়ে কথা পুরো হয়নি। তবে তার ব্যক্তিগত মত হলো, যারা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন সেই চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী, পুলিশদের প্রথমে ভ্যাকসিন দেয়া উচিত। সেই সঙ্গে বয়স্ক এবং যারা এমনিতে শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের রোগে ভোগেন, তাদের টিকা পাওয়ায় অগ্রাধিকার থাকা উচিত। সুস্থ যুবদের পরে টিকা দিলেও চলবে।
সবকিছু পরিকল্পনামাফিক চললে প্রথমে কয়েক লাখ টিকা পাওয়া যাবে। উৎপাদন শুরুর এক বছরের মধ্যে ১০০ কোটি ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়া হবে। এমনিতে সেরাম ইন্সটিটিউট বিশ্বে সব চেয়ে বেশি ভ্যাকসিন উৎপাদন করে।
পুনাওয়ালা বলছেন, চলতি সপ্তাহেই বেশি সংখ্যায় ভ্যাকসিন তৈরির লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হবে। তারপর তারা ভারতে চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল চালাবেন। আগস্টে সেই পরীক্ষা হবে। এই বছরের শেষের দিকেই ৩০ থেকে ৪০ কোটি ভ্যাকসিন তারা বাজারে ছাড়তে চান। জানুয়ারির শেষের মধ্যে তা রাজ্যগুলির হাতে তা চলে যাবে। তারপর ভারতে ব্যাপকভাবে টিকাকরণ শুরু হবে। অর্থাৎ নভেম্বরে টিকা বাজারে আসলেও সাধারণ লোকের কাছে পৌঁছতে ২০২১-এর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি লেগে যাবে।
টাইমস/জিএস