ভিডিও তৈরি ও শেয়ার করার অ্যাপ টিকটক ভারতে বন্ধ করে দিয়েছে অ্যাপল ও গুগল। মাদ্রাজ হাইকোর্টের একটি আদেশের জের ধরে টিকটক বন্ধ করে দেয়া হলো। খবর বিবিসির।
অ্যাপটি ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি ছড়ানো হচ্ছে এমন উদ্বেগ তৈরি হওয়ার পর অ্যাপ স্টোর থেকে টিকটক অ্যাপ সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
আদেশকে স্থগিত করতে অ্যাপটির মালিক চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্স মঙ্গলবার আপিল করলেও উচ্চ আদালত তা গ্রহণ করেনি।
ভারতে টিকটকের প্রায় এক কোটি ২০ লাখ ব্যবহারকারী আছে। যদিও সাম্প্রতিককালে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ভিডিও শেয়ারের ঘটনার পর তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল।
তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় এই অ্যাপটি ব্যবহার করে কথার সাথে নিজেদের ঠোঁট মিলিয়ে ছোট ছোট ভিডিও তৈরি করে তা শেয়ার করা হচ্ছিল।
আবার নিজেদের পছন্দের গানের সঙ্গে নাচ বা নানা ধরনের কমেডি তৈরিও সম্ভব এ অ্যাপটির দ্বারা। তবে টিকটক ব্যবহারকারী যারা ফোনে অ্যাপটি ডাউন লোড করেছিলেন তারা বুধবারও এটি ব্যবহার করতে পারছেন।
মাদ্রাজ হাইকোর্ট প্রাথমিক নির্দেশনায় পর্নোগ্রাফিকে উৎসাহিত করার অভিযোগে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার জন্য ফেডারেল সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ২২ এপ্রিল এ বিষয়ে আবারো শুনানির তারিখ রয়েছে। যদি অ্যাপটি মালিক প্রতিষ্ঠান আদালতে বলেছে যে খুব কম সংখ্যক ক্ষেত্রেই অ্যাপটির অপব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে।
কোম্পানিটি বলছে আপত্তিকর কনটেন্ট সরিয়ে নিতে তারা তাদের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করেছে এবং এ ধরনের অন্তত ৬০ লাখ ভিডিও ইতোমধ্যেই সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে এই অ্যাপটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৫০ কোটি।
আদালতের নির্দেশনার পর ভারতের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় গুগল ও অ্যাপলকে অনলাইন স্টোর থেকে অ্যাপটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। গুগল ও অ্যাপলের কোনো মন্তব্য এখনো আসেনি।
টিকটক অ্যাপটি কী?
চীনে তৈরি সামাজিক মাধ্যমের এই অ্যাপটি দিয়ে অল্পবয়সী লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে পরিচিত ফিল্মি ডায়লগ বা গানের সঙ্গে নিজেরা অভিনয় করে মজার মজার ভিডিও বানাচ্ছেন ।
তবে ১৫ সেকেন্ডের থেকে বড় ভিডিও বানানো যায় না এই অ্যাপে, আর নিজের স্বর ব্যবহার করতে পারবেন না। যাকে বলা হয় 'লিপ সিঙ্ক', অর্থাৎ ঠোঁট নাড়া।
২০১৬ সালে টিকটকের যাত্রা শুরু হয়েছিল, আর দুই বছরের মধ্যেই এর জনপ্রিয়তা হু হু করে বেড়ে যায়।
২০১৮-র অক্টোবরে আমেরিকায় সব থেকে বেশি ডাউনলোড করা অ্যাপ ছিল এই টিকটক। গুগল প্লে স্টোরে ৮০ লাখেরও বেশি ভারতীয় এই অ্যাপটির রিভিউ করেছেন।
বলিউড তারকাদের অনেকেই এই অ্যাপটিকে নিজেদের পছন্দের তালিকায় রেখেছেন।
টাইমস/এসআই