নোয়াখালীতে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর মাথার চুল কেটে দিয়ে এবং গরম খুন্তি দিয়ে সারা শরীর ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
সোমবার সন্ধ্যায় কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ভুক্তভোগী ওই নারীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওই নারীর অভিযোগ, এরপর চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে নেওয়ার সময় ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে ওই নারীকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়।
জানা গেছে, নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সোন্দলপুর ইউনিয়নের ওই নারীর সঙ্গে ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর বেগমগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মোশাররফ হোসেন উজ্জ্বলের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলেও হয়, যার বয়স এখন ৫ বছর।
ওই গৃহবধূ ও তার স্বজনরা জানান, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালিয়ে আসছিল উজ্জ্বল। বিদেশ যাওয়ার জন্য কয়েকবার তাকে টাকাও দেওয়া হয়। দুই মাস আগে সৌদি আরব থেকে ফিরে উজ্জ্বল আবারও যৌতুকের জন্য স্ত্রীর উপর নির্যাতন শুরু করেন।
গত বুধবার রাতে জেলা শহরের বছিরার দোকান এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ত্রীর মাথার চুল কেটে দিয়ে গরম খুন্তি দিয়ে সারা শরীর ঝলসে দেন উজ্জ্বল। এক পর্যায়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে যান কলি। চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেও সন্ত্রাসী নিয়ে উজ্জ্বল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, পুরো শরীর জায়গায় জায়গায় গরম খুন্তি দিয়ে ঝলসে দিয়েছে। হাত বেঁধে গলায় ছুরি ধরে আমাকে বলেছে, কাউকে বললে আমার বাচ্চার গলা কেটে ফেলবে।
ভুক্তভোগীর বাবা ইউসুফ আলী বলেন, খুন্তি দিয়ে সম্পূর্ণ শরীরে ছেঁকা দিলো। মাথার চুল কেটে দিয়েছে। আমার মেয়ে সুযোগ পেয়ে পালিয়ে অন্য একটা বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। আমি এর বিচার চাই।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নাসির উদ্দিন জানান, যে চিহ্নগুলো দেখেছি সেগুলো কোন হিট করা ম্যাটেরিয়াল দিয়ে দেয়া হয়েছে। উনাকে কিল-ঘুষিও মারা হয়েছে। উনার বুকেও ব্যাথা আছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়ে নোয়াখালী সদর সার্কেলের পুলিশ সুপার কাজী আবদুর রহীম বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা হবে। প্রকৃত আসামি যারা আছেন তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
টাইমস/এইচইউ