কক্সবাজারের ওপর চাপ কমাতে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে জাতিসংঘ।
কক্সবাজার শিবির থেকে স্বেচ্ছায় নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে জাতিসংঘ। এ বিষয়ে সহায়তা দিতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি একটি নথি তৈরি করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, কক্সবাজার শিবির থেকে যে রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহী তাদের চিহ্নিতকরণ, স্থানান্তর এবং তাদের বসবাসের জন্য টেকসই বসতির জন্য জাতিসংঘ ৮৬ লাখ থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ ডলার তহবিলের জন্য বিশ্বের কাছে আবেদন জানাতে পারে। ২০১৮ সালের ১২ মে তৈরি করা ‘কনসেপ্ট অব অপারেশনস’ শীর্ষক নথিতে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হাজার হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ওই দ্বীপে পৌঁছাতে কী ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের নৌপথে নিতে কয়েকঘণ্টা সময় লাগবে। রোহিঙ্গাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেখানে নিয়ে গেলে সেখানে নানান নতুন সংকটের সৃষ্টি হবে। এ ছাড়াও দ্বীপটি বন্যাপ্রবণ, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা এবং জোয়ারের পানিতে পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর স্বাগত জানায় তারা। তবে যে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় এখানে যেতে চায় তাদের স্থানান্তর করা হোক। এতে আপত্তি থাকবে না জাতিসংঘের। কক্সবাজারের শিবির পরিদর্শন শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সুরক্ষাবিষয়ক সহকারী হাইকমিশনার ভলকার টার্ক।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রোহিঙ্গা–অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধনে সামরিক অভিযান শুরু হলে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় পালিয়ে আসে। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গাসহ ১১ লাখ বাড়তি মানুষ এখন উপজেলা দুটির শরণার্থী শিবিরে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করছে। কক্সবাজারের ওপর চাপ কমাতে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
টাইমস/এসআর/এইচইউ