যেভাবে কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেল সিআইডি

একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ঘটনায় মূলহোতাসহ ৩৪জন আসামিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। সিআইডি কর্মকর্তারা এমন তথ্য জানিয়েছেন।

সিআইডি জানায়, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার একটি মাদক মামলার তদন্ত শুরু হয়। ওই মামলার সূত্র ধরে আরেকটি মানিলন্ডারিং মামলার অনুসন্ধান শুরু হয়। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত আসামি ও মাদকের গডফাদার নুরুল হক ভুট্টো, তার বড় ভাই নুর মোহাম্মদ, তার বাবা এজাহার মিয়া, তার ভাগ্নে ও কয়েকজন বিকাশ এজেন্টসহ মোট ১৭ জনের নামে টেকনাফ মডেল থানায় মানিলন্ডারিং মামলা করা হয়। পরে তাদের অর্থনৈতিক লেনদেনের সূত্র ধরেই মিরপুর সেনপাড়া থেকে মাদকের গডফাদার আফজাল হোসেন ইমন, তার স্ত্রী সাদিয়া আফরোজ, তার ছেলে সালাহউদ্দিন ওরফে প্রিন্স ও বিকাশের এজেন্ট স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়া নুরুল হক ভুট্টো ও তার বড় ভাই নুর মোহাম্মদের অর্থনৈতিক লেনদেনের সূত্র ধরে মিরপুর বিহারী ক্যাম্প এলাকা থেকে অপর মাদকের সম্রাঙ্গী রূপা ইসলাম, তার স্বামী আল আমিন, তাদের সহযোগী ফয়সাল, রিয়াজ ও বিকাশের এজেন্ট জনি, কুদ্দুসকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের আরেকটি লেনদেনের সূত্র ধরে নরসিংদী থেকে মাদকের ডিলার রায়হান, মো. আসাদুজ্জামান ও স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়।

পরবর্তীতে নুরুল হক ভুট্টো, তার বড় ভাই নুর মোহাম্মদ ও তার পিতা মো. এজাহার মিয়ার অর্থনৈতিক লেনদেনের সূত্র ধরে কেরানীগঞ্জ ঢাকা থেকে বিকাশের এজেন্ট আব্বাসকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের আরেকটি লেনদেনের সূত্র ধরে টঙ্গী গাজীপুর থেকে মাদকের সম্রাঙ্গী রানী, তার ব্যবসায়িক সহযোগী নাঈম হোসেন, ইব্রাহীম এবং বিকাশের এজেন্ট শাহাজালাল ও নাসিরউদ্দিন সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়। আরেকটি লেনদেনের সূত্র ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে মো. মুসা মিয়া নামের আরেক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়া নুরুল হক ভুট্টো, তার বড় ভাই নুর মোহাম্মদ ও তার পিতা মো. এজাহার মিয়ার অর্থনৈতিক লেনদেনের সূত্র ধরে জয়পুরহাট থেকে উত্তর অঞ্চলের মাদকের গডফাদার আবুল হোসেন ওরফে গোল্ড আবুলকে গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ সোমবার ও মঙ্গলবার মাদকের গডফাদার ও আর্মস ডিলার মো. গোলাম ফারুক ও তার স্ত্রী আফরোজা আক্তার ওরফে এ্যানীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার মো. গোলাম ফারুক আটটি মামলার আসামি। সে ২০০৯ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের হতদরিদ্র পরিবার থেকে শূন্য হাতে ঢাকায় আসে। ঢাকায় এসে গাজীপুরের এক গ্রুপের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাদের সঙ্গে সে অস্ত্র ব্যবসা শুরু করে। পাশাপাশি গাজীপুরে সে একটি গামেন্টর্স ফ্যাক্টরি দেয়। এর কিছুদিন পর সে ইয়াবা ব্যবসা শুরু করে। প্রথমে সে টেকনাফ থেকে নুরুল হক ভুট্টোর চাচা গুড়া মিয়ার সঙ্গে ইয়াবা ব্যবসা শুরু করে। তার পরে সে নুরুল হক ভুট্টো ও তার ভাই নুর মোহাম্মদর কাছ থেকে ইয়াবা এনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করে। এভাবে ইয়াবা ব্যবসার মাধ্যমে সে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক হয়। তার সম্পদের তালিকাও সিআইডি কর্মকর্তাদের কাছে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য : ওবায়দুল কাদের Apr 27, 2024
img
আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর যেসব এলাকায় Apr 27, 2024
img
গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা শুরু আজ, কেন্দ্রে থাকবে পানি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা Apr 27, 2024
img
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা Apr 27, 2024
img
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ Apr 27, 2024
img
আ.লীগ নেতাকর্মীদের দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর Apr 26, 2024
img
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ চুয়েট, খোলা থাকবে হল Apr 26, 2024
img
প্রথমবার এশিয়া কাপে আম্পায়ারিং করবেন বাংলাদেশের জেসি Apr 26, 2024
img
গাজায় ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারে লাগতে পারে ১৪ বছর : জাতিসংঘ Apr 26, 2024
img
বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী Apr 26, 2024