কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পূর্ব পাড়ায় আ. রহিম রাজনের (২৬) বাড়ি। তিনি তাবলিগ জামাতের কিশোরগঞ্জ জেলা মার্কাসের তশকিল কামরার (সদস্যদের বাইরে পাঠানো ও হিসাব রাখার দায়িত্বে থাকা) একজন সক্রিয় সদস্য।
প্রায় এক যুগ আগে রহিম তাবলিগ জামাতে যোগ দেন। তার মাধ্যমে অনেক তরুণ তাবলিগ জামাতের সাথি হন। এক বছর আগে একই এলাকার মাহমুদুল ও সোহেল নামে দুই তরুণ রহিমের মাধ্যমে তাবলিগ জামাতে যোগ দেন। সম্প্রতি তাবলিগ জামাতের স্থানীয় নেতৃত্ব নিয়ে রহিমের সঙ্গে মাহমুদুল, সোহেলসহ আরও কয়েকজনের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
এ অবস্থায় গত রোববার সকালে পাকুন্দিয়া থেকে তাবলিগ জামাতের ২৪ সদস্যের একটি দল কটিয়াদী কলামহল জামে মসজিদে আসেন। মসজিদটি রহিম, মাহমুদুল ও সোহেলদের এলাকায়। তাবলিগ সদস্যদের রহিম স্বাগত জানান এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু বিষয়টি মাহমুদুল, সোহেল ও তাদের অনুগতদের ভালো লাগছিল না। এ দিন বাদ জোহর তারা এসে বিষয়টি নিয়ে রহিমের সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং মসজিদে আসা সদস্যদের চলে যাওয়ার তাগিদ দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এদিন রাতে রহিম কলামহল জামে মসজিদে তারাবির নামাজ আদায় করে বাড়ি ফেরেন। জামাতের সদস্যদের প্রয়োজনে রাত পৌনে ১১টার দিকে রহিম আবার মসজিদের উদ্দেশে ঘর থেকে বের হন। ঘর থেকে ৫০ গজ এগোতেই কয়েকজন এসে রহিমের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় রহিম চিৎকার করে মাটিতে গড়াগড়ি শুরু করেন। একপর্যায়ে পাশে থাকা নর্দমায় ঝাঁপিয়ে পড়েন। রাতেই রহিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় রহিমের মামা মামুনুর রশিদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার কটিয়াদী থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ মাহমুদুল হাসান ও সোহেল মিয়া নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে।
রহিমের মামা মামুনুর রশিদ বলেন, তিনিই রহিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে ভর্তি করেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রহিমের শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
কটিয়াদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান, তদন্তের স্বার্থে পুরো ঘটনা স্পষ্ট করা যাচ্ছে না। তবে গ্রেপ্তার হওয়া মাহমুদুল ও সোহেল এজাহারভুক্ত আসামি।
টাইমস/এসআই