জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার কারাবন্দী সেই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় মামলা হয়েছে। উপজেলার কাশিড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন অভিযুক্ত আলালউজ্জামান ওরফে আলাল।
শনিবার তাকে বিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিপ্লব সাখিদার।
২২ জুন অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন মেয়েটির বাবা। পুলিশ ওই দিন রাতেই আলালউজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি জরুরি সভা ডেকে ২৫ জুন আলালউজ্জামানকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ওই ছাত্রী কাশিড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় শিক্ষক আলালউজ্জামান তাকে প্রেম নিবেদন করে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতেন। মেয়েটির বাবা ঘটনাটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে জানান। এ নিয়ে দেনদরবারে আলালউজ্জামান ‘অনুতাপ’ প্রকাশ করেন এবং এ ধরনের ঘটনা আর ঘটাবেন না বলে ক্ষমা চান। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বাবা বিষয়টি মীমাংসায় রাজি হন।
২০১৮ সালে কাশিড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে রাজশাহীর একটি কলেজে ভর্তি হয় ওই ছাত্রী। শিক্ষক আলালউজ্জামান কিছুদিন আগে মেয়েটির মুঠোফোনে কল করে ও খুদে বার্তা পাঠিয়ে প্রেম নিবেদন করেন। কুপ্রস্তাব দেন। মেয়েটি রাজি না হওয়ায় আলালউজ্জামান অশ্লীল বার্তাসহ মেয়েটির ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এরপর মেয়েটির বাবা কাশিড়া উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এতে আলালউজ্জামান ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়েটির বিরুদ্ধে বদনাম রটান।
ঘটনার সময় ২২ মে কলেজ বন্ধ থাকায় মেয়েটি গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিল। ওই দিন বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে বাড়ির পূর্ব দিকে গভীর নলকূপসংলগ্ন পাকা রাস্তার সেতুর ওপর মেয়েটিকে একা পেয়ে আলালউজ্জামান তাকে যৌন হেনস্তা করেন। মেয়েটির চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে শিক্ষক দৌঁড়ে পালান।
এ ঘটনায় ১৮ জুন অভিযুক্ত শিক্ষক নিজে অথবা অন্য কারও সহযোগিতায় ‘পাশা ভাই’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে মেয়েটির নামে অশ্লীল বার্তা লিখে পোস্ট করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আক্কেলপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জোবায়ের হোসেন বলেন, যৌন নিপীড়ন মামলার আসামি আলালউজ্জামান কারাগারে। শিগগিরই মামলাটির তদন্ত শুরু হবে।
টাইমস/এসআই