বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকার জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন।
রায়ে আদালত বলেন, জামিনে থাকা অবস্থায় আয়শা সিদ্দিকা তার বাবার জিম্মায় থাকবেন। আয়শা সিদ্দিকা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। ব্যত্যয় ঘটলে তাঁর জামিন বাতিল হবে।
এর আগে বুধবার তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়। ওই দিন আদালতে আয়শার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সরোয়ার হোসাইন।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ূন কবির মামলার কেস ডকেট নিয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনিও শুনানিতে অংশ নেন।
জেড আই খান পান্না আদালতকে বলেন, আয়শা ১৯ বছর বয়সী একটা মেয়ে। তার স্বামী এ ঘটনায় মারা গেছেন। তার পালানোর কোনো সুযোগ নেই। তার পক্ষে জামিন চান তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, তিনি (আয়শা) ঘটনার পরিকল্পনাকারী। এখনো মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়নি। ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাকে যেন জামিন দেয়া না হয়।
সব পক্ষের কথা শুনে বৃহস্পতিবার রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছিল হাইকোর্ট। আজ মিন্নির জামিন মঞ্জুর করে রায় দিল আদালত।
২০ আগস্ট হাইকোর্ট রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আয়েশার কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন। একই সঙ্গে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে মামলার কেস ডকেটসহ আসতে বলেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া বরগুনার এসপিকে আয়শার দোষ স্বীকার নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। ওই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী তাকে রামদা দিয়ে কোপাচ্ছেন। ঘটনার দিন থেকেই নিখোঁজ হন তারা। ছয় দিন পর গত ২ জুলাই নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। পরে রিফাত ফরাজীকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
এই মামলায় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পরে তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে তার বাবা দাবি করেন, পুলিশ যা বলতে বলেছে, আদালতে তা-ই বলেছেন আয়শা।
পরে আয়শার জামিন চেয়ে আবেদন করলে গত ২১ জুলাই বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে তা নাকচ হয়। ২৩ জুলাই বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তার পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। ৩০ জুলাই তা নামঞ্জুর করেন আদালত।
টাইমস/এসআই