দুবাই বসে ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ(৪৯) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

শুক্রবার পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) মহিউল ইসলাম বলেন, দুবাইয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কয়েকদিন আগে গ্রেপ্তার হন জিসান। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হয় বুধবার। গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তার হাতে ছিল ভারতীয় পাসপোর্ট। সেখানে তার নাম লেখা ছিল আলী আকবর চৌধুরী। পরে এনসিবি ঢাকা আর এনসিবি দুবাই(ইন্টারপোল) মিলে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে আমরা নিশ্চিত হই, গ্রেপ্তার এই আলী আকবর চৌধুরীই বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান।

পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. সোহেল রানা এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সূত্র বলছে, জিসান ইন্টারপোলের তালিকাভুক্ত আসামি। বাংলাদেশে পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য বছরখানেক আগে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশ।

জিসানের বিরুদ্ধে খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, বিস্ফোরক দ্রব্য রাখাসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

জিসান ১৯৭০ সালে ঢাকার খিলগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। বনানী, গুলশান, বাড্ডা, মতিঝিলসহ রাজধানীর কয়েকটি এলাকার ত্রাস ছিলেন জিসান। ২০০৩ সালে তিনি দেশ ছাড়েন। জিসান দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন।

প্রায় দুই দশক আগে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে। ওই তালিকায় জিসানের নামও রয়েছে।

২০০৩ সালের ১৪ মে ঢাকার মালিবাগে একটি হোটেলে জিসানকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযানে গিয়ে গুলিতে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের দুই কর্মকর্তা। ওই হত্যাকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।

এরপর জিসান গা ঢাকা দেন এবং ভারত হয়ে দুবাইয়ে চলে যান বলে ধারণা করা হয়। তাকে ধরতে বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধে রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল। ইন্টারপোলের নোটিশে জিসানের নাগরিকত্ব ডোমিনিকান রিপাবলিক ও বাংলাদেশের কথা বলা আছে।

দীর্ঘদিন দেশে না থাকলেও জিসান দুবাইয়ে বসেই ঢাকার অপরাধ জগতের ‘অনেক কিছু’ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন বলে বিভিন্ন সময়ে খবর এসেছে গণমাধ্যমে। সম্প্রতি ক্যাসিনো কাণ্ডে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এবং ঠিকাদার জি কে শামীম গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিসানের নাম নতুন করে আলোচনায় আসে। তাদের মাধ্যমে দুবাই বসে ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে জিসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ