ক্যাসিনো নিয়ে ‘অসাংবিধানিক বক্তব্য’ দেয়ার অভিযোগে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, জাতীয় সংসদের হুইপ শামশুল হক চৌধুরীসহ পাঁচজনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. মো. ইউনুছ আলী আকন্দ।
বুধবার ডাক ও রেজিস্ট্রি যোগে জনস্বার্থে তিনি এ নোটিশ পাঠান। নোটিশ প্রাপ্ত অন্যরা হলেন, স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হবে।
ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, সংবিধানের ১৮ (২) অনুচ্ছেদ অনুসারে সরকার জুয়া বন্ধে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু সেটা এখনও করেনি সরকার। ফলে সারা দেশে জুয়া-ক্যাসিনো প্রভাব বিস্তার করেছে। সে জন্য অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে, মানিলন্ডারিং হচ্ছে। ইদানিং সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। যাদের কিছু কিছু সংশ্লিষ্টতা আছে তাদের গ্রেপ্তার করছে। কিন্তু যারা গডফাদার তাদের গ্রেপ্তার করছে না।
তিনি আরও বলেন, ‘পত্রপত্রিকায় এসেছে রাশেদ খান মেনন ইয়ংমেন্স ক্লাবের গভর্নিং বডির সভাপতি। তিনি লাল ফিতা কেটে উদ্বোধন করেছেন এবং তার ছবি সেই চেয়ারম্যান কক্ষে আছে। তার বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। মিডিয়ায় দেখেছি পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সচিব বলেছেন, বিদেশিদের জন্য ক্যাসিনোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন। এ বক্তব্য অসাংবিধানিক। এ ছাড়া একজন হুইপ মিডিয়ায় জুয়া বা ক্যাসিনো বন্ধ নিয়ে মন্তব্য করেছেন, এগুলো বন্ধ হয়ে গেলে ক্লাব কীভাবে চলবে! এখন কথা হচ্ছে অবৈধভাবে উপার্জন করে ক্লাব চলবে?’
তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। এ বিষয়গুলো যে মিডিয়ায় দেখা যায় তা কতটুকু সত্য, এগুলোর বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছি। যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব না পাওয়া যায় তাহলে ধরে নেয়া হবে মিডিয়ায় যা এসেছে তা সত্য এবং ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করব।’
বৃহস্পতিবার সাড়ে ১১টার পর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ১৪ দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
ইয়ংমেনস ক্লাবের ক্যাসিনো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেনন বলেন, ‘এটা আলংকারিক পদ, দায়িত্বের পদ না। আমি তো বলেছি, এক দিনই আমি ক্লাবে গিয়েছি, ফিতা কেটেছি, ওই দিনই শেষ। এতে যদি আমার গায়ে কালিমা লাগে, লাগবে।’
স্থানীয় সাংসদ হিসেবে ক্লাবের কার্যক্রম সম্পর্কে তার জানা উচিত ছিল কি না? প্রশ্নের জবাবে মেনন বলেন, ‘প্রশাসনের কেউই জানল না, আমি সংসদ সদস্য হিসেবে সব জেনে ফেলব, ব্যাপারটা কি এতই সহজ?’
একই সভায় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমও উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিস্মিত ও দুঃখিত হয়েছি যে এখানে কিছু রাজনৈতিক কর্মী দুর্বৃত্তায়নে পরিণত হয়েছে। এসব দুর্বৃত্তায়নকে কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বিস্মিত ঢাকা শহরে প্রশাসনের নাকের ডগার ওপরে কীভাবে এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। প্রশাসনের ব্যর্থতা ও নির্লিপ্ততাকে নিন্দা করি।’
১৪ দলের এই নেতা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো অশুভ শক্তি যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার ও চক্রান্ত করতে না পারে, সে ব্যাপারে খেয়াল থাকতে হবে।
টাইমস/এসআই