প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। ইতিমধ্যেই বিশ্বে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন প্রায় ৩২ লক্ষ মানুষ। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ২৭ হাজার মানুষের। আমেরিকাতেও মৃতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাপিয়ে গিয়েছে। প্রতিদিনই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রাণ হারাচ্ছে হাজারো মানুষ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা ভাইরাসটি প্রতিরোধ করতে প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর প্রতিষেধক বা টিকা উদ্ভাবন করতে পারেনি গবেষকরা।
এরই মধ্যে করোনা নিয়ে একটি সুখবর দিয়েছেন মার্কিন এক বিজ্ঞানী। তিনি দাবি করেছেন, শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ রুখে দিতে পারে ভাইরাসজনিত রোগের ওষুধ ‘রেমডেসিভির’। আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী এপিডেমিওলজিস্ট অ্যান্টনি ফাওসি এ দাবি করেছেন।
ফাওসি বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বহু পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছি, করোনা রোগীদের সারিয়ে তুলতে এখন যে সব ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, তাদের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি দ্রুত গতিতে কাজ করে রেমডেসিভির। ভাইরাসজনিত রোগের এই ওষুধ শরীরে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ রুখে দিতে পারে।”
করোনা রোগীদের আরও দ্রুত সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে রেমডেসিভির। আর ওই ওষুধ প্রয়োগে রোগীদের কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ারও শিকার হতে হয়নি বলেও দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই বিজ্ঞানী।
তিনি জানিয়েছেন, রেমডেসিভির কতটা কার্যকরী হচ্ছে, তা বোঝার জন্য আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার ৬৮টি জায়গায় ১ হাজার ৬৩ জন করোনা রোগীর উপর তা প্রয়োগ করে চালানো হয়েছিল ট্রায়াল। তাতে দেখা গিয়েছে, করোনা রোগীদের শরীরে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ রুখে দিতে পারে রেমডেসিভির।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদস্থ কর্তা মিশেল রায়ান বুধবার ফাওসির এই দাবি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেছেন, “এখনও ওই ট্রায়ালের খুঁটিনাটি আমার খতিয়ে দেখা হয়নি।”
জানা গেছে, এই রেমডেসিভির আটের দশকে ভাইরাস এইচআইভি-র সংক্রমণ রুখতে ততটা কার্যকরী হতে পারেনি। এমনকি, ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতেও ব্যর্থ হয়েছিল রেমডেসিভির।
গত বছর চিনের উহান প্রদেশে প্রথম যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের উপর এই রেমডেসিভিরই প্রয়োগ করা হয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (‘হু’) পক্ষ থেকে। সে বিষয়ে হু জানায়, সে ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছিল রেমডেসিভির। যদিও এ বারের মার্কিন পরীক্ষার মতো হু সেই ট্রায়াল খুব বেশি সংখ্যক করোনা রোগীর উপর চালায়নি। সূত্র আনন্দবাজার পত্রিকা।
টাইমস/এইচইউ