সাতক্ষীরায় ঘরে জোয়ারের পানি, ভাটার অপেক্ষায় বাবা-মেয়ে!

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর থেকে নিয়মিত জোয়ার-ভাটা ওঠা নামা করছে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নে। আম্পানের আঘাতে ওই ইউনিয়নের ১৩টি স্থান ভেঙে কপোতাক্ষ নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। ঝড়ের পরপরই এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করতে সক্ষম হলেও পূর্ণিমার জোয়ারে তা আবার ভেঙে যায়। ফলশ্রুতিতে ওই এলাকায় নিয়মিত জোয়ার-ভাটা ওঠা নামা করছে। এতে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।এছাড়া পানির স্রোতে ভেঙে গেছে কাঁচ-পাকা ঘর বাড়ি। কিছু ভাল থাকলেও জোয়ারের পানিতে বেশির ভাগ সময় ডুবে থাকছে। এতে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া নানা ধরণের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

আম্পানের আঘাত হানার পর থেকে জোয়ারে ডুবে যাচ্ছে প্রতাপনগরের একাব্বার গাজীর ঘর। তাইতো দুই মেয়ে, দুই ছেলে নিয়ে অপেক্ষায় থাকতে হয় নদীতে কখন ভাটা লাগে তার অপেক্ষায়।

পেশায় ভ্যানচালক একাব্বার গাজী বলেন, জোয়ারের পানি বর্তমানে বিপদ সীমানার ওপরে। প্রতিদিন ঘরে পানি ঢুকছে। যখন নদীতে জোয়ার (রাত-দিন দুই বার) হয়; তখন সন্তানদেরকে সাথে নিয়ে বসে থাকি। জোয়ার শেষ হওয়ার পর ভাটায় পানি নেমে গেলে তারপর স্বাভাবিক হই।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে রাতে জোয়ারের সময় বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। এসময় সন্তানদেরকে গভীর রাত পর্যন্ত বসে থাকতে হয়। জোয়ারের পানি নেমে গেলে তারপর ঘুমায়।

এমতাবস্থায় প্রতাপনগর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

প্রতাপনগর গ্রামের শিহাব জাকারিয়া বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, উপকূলীয় মানুষের দুঃখ কষ্টের শেষ নাই। এখানকার প্রতিটি মানুষকে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। এখানকার প্রধান সমস্যা টেকসই বেড়িবাঁধ। সরকারিভাবে দ্রুত বাঁধ নির্মাণ সম্ভব না হলে আমাদের ইউনিয়ন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, আমরা ভাল নেই। লোনাপানির সঙ্গে যুদ্ধ করে মানুষ বেঁচে আছে।

তিনি আরও জানান, শুরুতে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ দেয়া হলেও তা আবারও ভেঙ্গে গেছে। এতে মানুষ হতাশ হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডও আমাদেরকে তেমন কোনো সহযোগিতা করছে না। শুরুতে কিছু বাঁশ এবং বস্তা দিয়ে সহযোগিতা করলেও পরবর্তীতে আর কোনো সহযোগিতা করেনি। বাঁধ নির্মাণের কথা বললেও কবে নাগাদ শুরু হবে তার কোনো নিশানা আমরা পাচ্ছি না।

 

টাইমস/মামুন/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করার আগে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিবেচনা করুন : প্রধানমন্ত্রী May 07, 2024
img
বান্দরবানে যৌথ অভিযানে কেএনএফের এক সন্ত্রাসী নিহত, বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার May 07, 2024
img
ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুল-এর প্রশিক্ষণ উন্নয়নে যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা May 07, 2024
img
ভোট কেন্দ্রে অনুপ্রবেশকারীদের প্রতি সিইসির কঠোর হুঁশিয়ারি May 07, 2024
img
ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে কোক স্টুডিও বাংলা, ফের সমালোচনা May 07, 2024
img
দেশে যানবাহনের নতুন স্পিড লিমিট, মোটরসাইকেলের গতি নামানো হলো ৬০-এ May 07, 2024
img
সূর্যকুমারের সেঞ্চুরিতে জয়ে ফিরল মুম্বাই May 07, 2024
img
রাফায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে নিহত ১২, যুদ্ধবিরতি অনিশ্চিত May 07, 2024
img
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ৩য় দফার ভোটগ্রহণ শুরু May 07, 2024
img
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন May 07, 2024