ভারতীয় স্পাই ড্রোন ভূপাতিত করল পাকিস্তান, নেপথ্যে যে কারণ!

বিরোধীপূর্ণ কাশ্মীর সীমান্তে এবার ভারতীয় কোয়াডকপ্টার ড্রোন ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান। স্পাই ড্রোনটি সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার পরপরই তা গুলি করে ভূপাতিত করে পাক রেঞ্জার্স।

তুর্কি সংবাদমাধ্যম ইয়েনি শাফাকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ভারতীয় গোয়েন্দা কোয়াডকপ্টার ড্রোনটি কাশ্মীরের পানাড়ু সেক্টরের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে গুলি করে ড্রোনটি ভূপাতিত করে পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী পাক রেঞ্জার্স।

ইয়েনি শাফাকের খবরে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ভূখণ্ডের ২০০ মিটার ভেতরে অনুপ্রবেশ করে ওই কোয়াডকপ্টারটি।

এ ব্যাপারে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, চলতি বছরে অন্তত ১০টি ভারতীয় স্পাই কোয়াডকপ্টার ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় ভারতীয় প্রতিরক্ষা দপ্তর বা সেনাসূত্রের বরাতে এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে গতকাল রোববার ভারত এবং চীনের সেনা অফিসাররা লাদাখ ও গালওয়ান উপত্যকায় চলমান বৈরিতা নিরসনে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে প্যাংগং, ডেপসং নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনও সমাধানে পৌছতে পারেনি চীন-ভারত।

কূটনৈতিক স্তরেও দুই দেশের মধ্যে লাগাতার আলোচনা চলছে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, আগামী শীতে ভারতের সীমান্ত ধরে বড় বড় সংঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পাকিস্তান এবং চীন একসঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে সংঘাতে নামতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ধারণা করা হচ্ছে, ভারতকে এক দিকে উত্তর পূর্বের রাজ্য অরুণাচল এবং সিকিমে চীনের বিরদ্ধে লড়াই করতে হবে। অন্যদিকে লাদাখ এবং হিমাচলে চীনকে আটকাতে হবে। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গে কাশ্মীর, পাঞ্জাব এবং রাজস্থান সেক্টরে ভারতের সংঘাত শুরু হতে পারে। অর্থাৎ, দীর্ঘ সীমান্ত অঞ্চলে ভারতকে সেনা প্রস্তুত রাখতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব আশঙ্কা থেকেই সীমান্তের বিভিন্ন সেক্টরে প্রতিবেশী দেশের সেনাদের তৎপরতা ও শক্তি পরখ করতেই ভারত ড্রোন অ্যামবুশ করার চেষ্টা করছে।

প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরের দুটি অংশের একটি পাকিস্তান ও অপরটি ভারত নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এছাড়া লাদাখের একটি ছোট অঞ্চল রয়েছে চীনের দখলে।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মির নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। প্রতিবেশী দেশ দুটি ১৯৪৮ ও ১৯৬৫ সালে কাশ্মির ইস্যূতে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

জম্মু-কাশ্মীরের কয়েকটি গোষ্ঠী ভারতের শাসন থেকে মুক্তিলাভের জন্য যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় সেনাদের নির্যাতন, রাষ্ট্রীয় বৈষম্য ও নিগৃহের কারণে মুক্তিকামী কাশ্মিরীদের একটি অংশ এখন প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হতে চায়।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on: