শিশুর কৃমি হলে করণীয়

আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিশুর পেটেই কৃমি হয়। বিশেষ করে ২-১০ বছর বয়সী শিশুদের কৃমি আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। নানা কারণে কৃমি দ্বারা শিশু আক্রান্ত হতে পারে। তার মধ্যে বেশির ভাগই পানি ও খাদ্যের মাধ্যমে শিশুর পেটে প্রবেশ করে। শিশু যখন খালি পায়ে হাঁটে বা খালি পায়ে পায়খানা ব্যবহার করে তখন মাটিতে কিংবা সুপ্ত অবস্থায় থাকা কৃমির লার্ভা পায়ের চামড়া ভেদ করে ঢুকে যায় এবং পরে পেটে প্রবেশ করে। কৃমি পরজীবী। কৃমি অন্ত্রের মধ্যে বাস করে পুষ্টিকর খাবারের অনেকাংশ খেয়ে ফেলে। তাই আক্রান্ত শিশু অপুষ্টিতে ভুগতে পারে। কৃমি রক্ত চুষে খায়, ফলে শিশু রক্ত স্বল্পতার শিকার হয়। শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। সুচকৃমি নামে এক প্রকার ছোট ছোট কৃমি প্রায়ই বাচ্চার পায়খানার রাস্তায় দেখা যায়। এতে আক্রান্ত শিশু সাধারণত খিটখিটে মেজাজের হয়।

এছাড়া কৃমি নিয়ে আমাদের ভেতর কিছু ভ্রান্ত ধারণা আছে। যেমন- অনেক মায়েরা মনে করেন শিশু ঘুমের মধ্যে দাঁত কাটে বা দাঁত দিয়ে শব্দ করে, সেজন্য শিশুর কৃমি হয়েছে। এমন ধারণা সত্য নয়। অনেক শিশুই  ঘুমের মধ্যে দাঁত কাটে। মায়েরা অনেক সময় শিশুর দুধে বা অন্য খাবারে চিনি দিতে চান না, কারণ তাদের ধারণা চিনি খেলে শিশুর পেটে কৃমি হয়। এই ধারণারও কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। শিশু মিষ্টি জাতীয় খাবার পছন্দ করে তাই শিশুর বারবার কৃমি হয় এটাও সত্য নয়। কৃমি হওয়ার সঙ্গে চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবারের সম্পর্ক নেই।

পেটে কৃমি হওয়ার লক্ষণ

  • খাবারে অরুচি, পেট ফেঁপে থাকা, বমি বমি ভাব।
  • পেট ফুলে থাকা, মাঝে মাঝে বদ হজম হওয়া। 
  • গুড়ি কৃমি হলে পায়খানার রাস্তায় চুলকায়। 
  • বিনা কারণে ঘন ঘন থুতু ফেলা। কারণ কৃমি মুখের মধ্যে লালা বাড়িয়ে দেয়।
  • শিশুর মারাত্মক দুর্গন্ধযুক্ত মলের অর্থ হল কৃমির কারণে পেটে সংক্রমণ।
  • মলের সঙ্গে মাঝে মাঝে কৃমি বেরিয়ে আসে। এজন্য বাচ্চার পায়খানার পর মলের দিকে নজর রাখুন।

কৃমি রোধে চাই সচেতনতা

  • শিশুর ২ বছর বয়স থেকেই ৬ মাস পরপর কৃমির ওষুধ খাওয়ান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে আমরা যা খাই তার তিন ভাগের এক ভাগ খেয়ে ফেলে কৃমি। কারণ কৃমি পরজীবী। কৃমিকে বাঁচতে হয় আমাদের শরীরের উপর নির্ভর করে। 
  • আপনি নিজে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন। নিজে খাওয়ার আগে এবং শিশুকে খাওয়ানোর আগে হাত ধুয়ে নিন।
  • শিশু নিজ হাতে খেলে খাবারের আগে তার হাত ধুয়ে দিন।
  • খাবার ঢেকে রাখুন, যেন মাছি বসতে না পারে।
  • শিশুকে বাইরের খাবার খাওয়াবেন না।
  • খাবারের আগে সব ধরণের ফলমূল বিশেষ করে পাকা কলা খোসা ছাড়ানোর পর ধুয়ে নিন। কারণ কলার খোসায় কৃমির ডিম থাকতে পারে।
  • পরিবারের সবাইকে কৃমির ওষুধ খাওয়ান।

 

টাইমস/এসই/এইচইউ

Share this news on: