দুই একদিনের মধ্যেই ইমামতির চাকরি ছেড়ে বড় ছেলে জোনায়েদকে নিয়ে স্থায়ীভাবে গ্রামের বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বায়তুস সালাহ জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন। শুক্রবার রাতে এশার নামাজের আগে স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে এ কথা বলেন মাওলানা দেলোয়ার। স্ত্রীকে দেয়া কথা রেখেছেন তিনি। ছেলেকে নিয়ে মাওলানা দেলোয়ার বাড়ি ফিরেছেন ঠিকই, তবে লাশ হয়ে।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ঢালুয়া ইউনিয়নের বদরপর মধ্যপাড়ার মৃত হাফেজ মাওলানা শফিকুর রহমানের ছেলে মাওলানা দেলোয়ার হোসেন। শুক্রবার এশার নামাজের আগে স্ত্রী ফাহমিদা আক্তারকে মোবাইলে ফোন করে তিনি জানান, ‘আমার এখানে ভালো লাগছে না। ২/১দিনের মধ্যে বড় ছেলে অসুস্থ জোনায়েদ হোসেনকে নিয়ে চাকরি ছেড়ে একেবারে বাড়ি চলে আসবো। কিন্তু মোবাইলে কথা বলা শেষ করে তিনি এশার নামাজে ইমামতি করেন। পরে মোনাজাতের সময় মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ছেলে জোনায়েদসহ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন দগ্ধ হন। পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যান বাবা-ছেলে।
এদিকে পিতা-পুত্রের মৃত্যুর ঘটনায় নাঙ্গলকোটের ঢালুয়া ইউনিয়নের বদরপুর মধ্যপাড়ায় চলছে শোকের মাতম।
জানা গেছে, হাফেজ দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়ার বড় ছেলে জোনায়েদ হোসেন (১৭) নিউ খানপুর হাসপাতাল রোড কওমি মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণিতে এবং ২য় ছেলে হাফেজ জাকারিয়া (১৩) একই এলাকার জামেয়া হাজী সাইদুদ্দিন হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশুনা করত। দেলোয়ার হোসেন দুই ছেলেকে নিয়ে ফতুল্লা থানার তল্লা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন। তিনি দীর্ঘ ২৫ বছর বায়তুস সালাহ জামে মসজিদে ইমামতি করেছেন।
পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার তিন মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৮), সুরাইয়া আক্তার (৮) ও ছোট মেয়ে ফাইজা আক্তারকে (৩) নিয়ে নাঙ্গলকোটে গ্রামের বাড়িতে থাকতেন।
আরও পড়ুন-
মসজিদে বিস্ফোরণ: চলে গেলেন ইমামও, মৃত্যু বেড়ে ২২
ফতুল্লায় মসজিদে বিস্ফোরণে নাশকতার গন্ধ পাচ্ছি
নামাজরত ছিলেন তিন ভাই, বিস্ফোরণে দুইজনের মৃত্যু
টাইমস/এসএন